প্রেসবক্স লাগোয়া ভিআইপি আসনে বসে একসঙ্গে খেলা দেখছিলেন হাই পারফরম্যান্স বিভাগের চেয়ারম্যান নাঈমুর রহমান দুর্জয় ও নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন। শারজায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খুব কম সময়ই উল্লাস করার মুহূর্ত পেয়েছেন তারা। শুধু তারাই নন, দর্শকরাও আছেন।
খেলা শেষে মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ও দুর্জয়ের চোখেমুখে ছিল পরাজয়ের হতাশা। সংবাদকর্মীদের অনুরোধে রাজি হন হারের প্রতিক্রিয়া জানাতে। দুর্জয়ের চোখে হারের কারণ, পাওয়ার হিটিং।
শারজায় এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিং করে ৭ উইকেটে ১২৭ রান করে বাংলাদেশ। রানতাড়া করতে নেমে ৯ বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে আফগানিস্তান। ব্যাট হাতে শেষ দিকে ঝড় তোলেন নাজিবউল্লাহ জাদরান। ৬ ছক্কায় ১৭ বলে ৪৩ রান করেন এই ব্যাটসম্যান। তাতেই ম্যাচ নিশ্চিত হয়ে যায় আফগানদের।
দুর্জয় বলেন, ‘শেষের দিকে না, বলবো যে আমরা শুরু থেকেই ধুঁকছিলাম। বিশেষ করে আমাদের টপ অর্ডার। আমরা পাওয়ার প্লেতে যেমন কাজ করতে পারিনি, তেমনই ম্যাচটি হাতের মুঠোয় আসার পরে বোলিংয়ে রান রেট দশের বেশি নিয়ে গেলাম। তারপর একটা-দুটা ওভার (রান বেশি দিলাম)। আমার কাছে মনে হলো যে আমরা পাওয়ার হিটিংয়ের কাছে হেরে গেছি।’
৬.২ ওভার না যেতেই বাংলাদেশ হারিয়ে ফেলে ৪ উইকেট। সেই ধাক্কা সামল উঠে কোনোমতে মোসাদ্দেকের ব্যাটে ভর করে ১২৭ রান করে তারা। ৩১ বলে ৪৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন তিনি। মাহমুদউল্লাহ করেন ২৭ বলে ২৫ রান। ধীরে খেলে থিতু হলেও যখন মারা প্রয়োজন ছিল তখন তিনি ফেরেন সাজঘরে। এ ছাড়া আর কেউই বিশের ঘর পেরোতে পারেননি।
পাওয়ার হিটিংয়ের ঘাটতির সঙ্গে দুর্জয়ের কাছে ব্যাটিং ব্যর্থতার পেছনে উইকেটও দায়ী, ‘ঘরের মাঠে আমরা যে উইকেটে খেলি আমাদের বোলাররা অভ্যস্ত এবং সহায়তা পায়। এখানে সেই সুযোগ থাকে না, আইসিসি-এসিসির আসরে। সেখানে আসলে ব্যাটসম্যানদের আগ্রাসনটা যেরকম জরুরি, তেমনি পাওয়ারটা (হিটিং) জরুরি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আমাদের আরও আগ্রাসী হতে হবে।’
পাওয়ার হিটিং নিয়ে দেশের ক্রিকেট চর্চা বহুদিন ধরে। তবুও যেন কোনও কূল কিনারা পাচ্ছে না টিম ম্যানেজমেন্ট হতে শুরু করে খোদ ক্রিকেটাররা। সাবেক অধিনায়ক দুর্জয়ের মতে মানসিক আগ্রাসন থাকলেও শারীরিকটা নেই। তিনি বলেন, ‘আমাদের মানসিক আগ্রাসন আছে, কিন্তু শারীরিক যে পাওয়া হিটিংয়ের কথা বলি সেটা না থাকলে টি-টোয়েন্টিতে সংগ্রাম করতে হবে, যে কেউ সংগ্রাম করবে।’