![](https://photonewsbd.com/wp-content/uploads/2022/07/3-5-1024x533.jpg)
যথাযথ শিক্ষা সনদ, জন্ম সনদ বা অন্যান্য যৌক্তিক প্রয়োজনীয় দলিল থাকা সত্ত্বেও অযৌক্তিকভাবে অতিরিক্ত দলিল চাওয়া থেকে বিরত থাকতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) অনুবিভাগ। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে সংশোধনের আবেদন অনিষ্পন্ন রাখা থেকেও বিরত থাকতে নির্দেশনা দিয়েছে এনআইডি।
এনআইডি সেবা তরান্বিত করে নাগরিকদের ভোগান্তি কমাতে ১২টি নির্দেশনা দিয়ে মাঠপর্যায়ে চিঠি দিয়েছে ইসি। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন) মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত নির্দেশনা সব আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, সিনিয়র জেলা/জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়।
নির্দেশনায় বলা হয়, জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যই ছিল নাগরিক সেবা আরও সহজ ও গতিশীল করা। সে লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ে ক, খ, ও গ ক্যাটাগরির সংশোধনের আবেদনগুলো সংযুক্ত দলিল যাচাই-বাছাই করে এবং প্রয়োজনানুসারে তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকেই আবেদন নিষ্পত্তি (অনুমোদন/বাতিল) করে নাগরিক সেবাকে গতিশীল করার নিমিত্তে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছিল। এ কার্যক্রম সুচারুরূপে সম্পাদন করতে সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিম্নোক্ত দায়িত্বগুলো পালনের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো
নাগরিকদের দুর্ভোগ লাঘবের বিষয়টি লক্ষ্য রেখে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের আবেদন নিষ্পত্তি করতে হবে; দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তার আওতাভুক্ত (ক, খ, গ) ক্যাটাগরির আবেদনগুলো পরীক্ষান্তে নিজেই নিষ্পত্তি (অনুমোদন/বাতিল) করতে পারবেন; যথাযথ শিক্ষা সনদ, জন্ম সনদ বা অন্যান্য যৌক্তিক প্রয়োজনীয় দলিল থাকা সত্ত্বেও অযৌক্তিকভাবে অতিরিক্ত দলিল চাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে; দীর্ঘদিন ধরে সংশোধনের আবেদন অনিষ্পন্ন রাখা থেকে বিরত থাকতে হবে। প্রয়োজনে শুনানি গ্রহণ ও দাখিল করা যৌক্তিক কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তার আওতাধীন আবেদনগুলো নিষ্পত্তি (অনুমোদন/বাতিল) করতে হবে; মাঠপর্যায়ে সব ক্যাটগরির আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সপ্তাহে ২ (দুই) দিন শুনানি গ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে। শুনানি প্রদানের তারিখের পরবর্তী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে; ক্যাটাগরি বিভাজনের পর থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তার এখতিয়ারভুক্ত সংশোধনের আবেদনগুলো ক্যাটাগরি ‘ক’ ৭ কার্যদিবস, ক্যাটাগরি ‘খ’ ১৫ কার্যদিবস ও ক্যাটাগরি ‘গ’ ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পন্ন করবেন।
আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তারা তার আওতাধীন যেসব আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যর্থ হবেন, সেসব আবেদন সংশ্লিষ্ট দলিল, তদন্ত প্রতিবেদন এবং আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তারা সুস্পষ্ট মতামতসহ আবেদনগুলো নিষ্পত্তির জন্য মহাপরিচালক, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ বরাবর প্রেরণ করবেন। এক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রজ্ঞাপনের আলোকে ‘গ’ ক্যাটাগরি থেকে ‘ঘ’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরের সুপারিশ করতে পারবেন; দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তার কার্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সফটওয়্যারে ইউজার অ্যাকাউন্টটি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে। সংশোধনের আবেদন নিষ্পন্নের বিষয়টি জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে পর্যবেক্ষণের আওতায় থাকবে। সব প্রকার লগ এনআইডি কেন্দ্রীয় ডাটাবেজে সংরক্ষিত থাকে, এতে প্রত্যেক ইউজার তার কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির আওতায় থাকবে।
যেসব নাগরিক অনলাইনে আবেদন করতে অসমর্থ হবেন তাদের উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে অনলাইনে আবেদনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করতে হবে। হেল্প ডেস্ক অনলাইন আবেদন সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ এবং সংশোধন সংশ্লিষ্ট যৌক্তিক দলিল বিষয়ে তথ্য সরবরাহ করবে; এছাড়া জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে আবেদনের ক্যাটাগরি বিভাজন করার ক্ষেত্রে অঞ্চল ভিত্তিক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সচেষ্ট থাকতে হবে।
জানা যায়, বর্তমানে কমবেশি তিন লাখের মতো এনআইডি সংশোধনের আবেদন অনিষ্পন্ন রয়েছে। এগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে নিষ্পন্ন করার জন্যই মাঠপর্যায়ে নতুন করে আবার নির্দেশনা দিল কমিশন। ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের পর থেকে এনআইডি সেবা ফ্রি ছিল। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে হারানো এনআইডি তোলা ও সংশোধন সেবায় ফি নেওয়া শুরু করে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।