ফটোনিউজবিডি ডেস্ক:
ইরানের রাজধানী তেহরানে নিহত হয়েছেন ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া। আজ বুধবার তেহরানে স্থানীয় সময় ভোরে নিজ বাসভবনে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
হানিয়া ইসরায়েলের গুপ্তহত্যার হামলার শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছে হামাস। তবে ইসরায়েল এখন পর্যন্ত এ হামলার দায় স্বীকার করেনি।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ইসমাইল হানিয়া নিহত হওয়ার ঘটনায় গাজার ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ভয় এবং উদ্বেগ বিরাজ করছে। এই হত্যার ঘটনাটি খুবই অপ্রত্যাশিত এবং তাৎপর্যপূর্ণ।
গাজার জনগণ হানিয়াকে শুধুমাত্র হামাসের রাজনৈতিক নেতা হিসেবে নয়, বরং যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনার নেতা হিসেবে দেখেন। তারা আশা করেছিলেন যে, গাজায় একটি যুদ্ধবিরত হবে, যা ৯ মাসের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটাবে।
গাজা এবং পশ্চিম তীর জুড়ে ফিলিস্তিনিরা ইসমাইল হানিয়াকে একজন মধ্যপন্থী নেতা হিসেবে দেখেন। তিনি হামাসের সামরিক শাখার অন্যান্য নেতাদের তুলনায় অনেক বেশি বাস্তববাদী। গাজাবাসীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় তিনি।
হানিয়া শরণার্থী শিবিরে বড় হয়েছেন এবং ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনি অঞ্চল থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়া শরণার্থী পরিবারের বংশধরদের বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠদের প্রতিনিধিত্ব করেন।
হানিয়ার মৃত্যুর খবর গাজায় খুব নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। এখানকার মানুষজন বলছেন, এই যুদ্ধ আরও খারাপ দিকে মোড় নিচ্ছে এবং এখন কোনো ধরনের স্থিতিশীলতা আসার সম্ভাবনা নেই। তাদের আশঙ্কা, সামনে অনেক কঠিন দিন আসছে, বিশেষ করে যুদ্ধবিরতি চুক্তির আলোচনার ক্ষেত্রে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা ও ২৫০ জনকে জিম্মি করার পর হানিয়া এবং হামাসের অন্যান্য নেতাদের হত্যা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ইসরায়েল।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় প্রতিশোধমূলক হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। নয় মাসের বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৯ হাজার ৩৬০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৯০ হাজার ৯০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে। গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, হামলার ক্ষেত্রে ইসরায়েল বেসামরিক এবং যোদ্ধাদের মধ্যে পার্থক্য করে না।
এই বছরের শুরুর দিকে গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় হানিয়ার তিন ছেলে নিহত হয়। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মতে, হানিয়ার তিন ছেলের মধ্যে দুজন হামাসের সামরিক অপারেটিভ এবং তৃতীয়জন সেল কমান্ডার ছিলেন।
জাতিসংঘের মতে, গাজায় দীর্ঘ সময় ধরে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে মানবিক সংকটে দিন পার করছেন ফিলিস্তিনিরা। খাবার, পানি, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তার অভাবে উপত্যকাটির ২৩ লাখেরও বেশি বাসিন্দা চরম ক্ষুধা ও ভয়াবহ অপুষ্টিতে ভুগছেন।