23 December 2024

মঙ্গলবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

ফের অস্ত্র চাইলেন জেলেনেস্কি

Share

ফটোনিউজবিডি ডেস্ক:

রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে দ্রুত পাল্টা আক্রমণ শুরু করতে চান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এ লক্ষ্যে পশ্চিমা মিত্র দেশগুলোর কাছে আবারও অস্ত্র চেয়েছেন তিনি। এমনকি গত জুনের পাল্টা আক্রমণ আরও আগে শুরু করতে চেয়েছিলেন বলেও জানান তিনি।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিএনএন’কে দেওয়া জেলেনস্কির ওই সাক্ষাৎকারটি বুধবার প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি বলেছেন, তিনি রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ গত জুনের চেয়ে তাড়াতাড়ি শুরু করতে চান। আর সেই মিশনের জন্য অস্ত্র সরবরাহ ত্বরান্বিত করতে পশ্চিমা মিত্রদের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি চেয়েছিলাম আমাদের পাল্টা-আক্রমণ অনেক আগে শুরু হোক, কারণ সবাই বুঝতে পেরেছিল, যদি পাল্টা আক্রমণ দেরি করে শুরু করা হয়, তাহলে আমাদের ভূখণ্ডের একটি বড় অংশে মাইন স্থাপন করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের শত্রুকে সেই সময় দিয়েছি এবং সম্ভবত ভূখণ্ডজুড়ে আরও মাইন স্থাপন করার ও শত্রুদের প্রতিরক্ষামূলক লাইন প্রস্তুত করার সময়ও দিয়েছি।’

জেলেনস্কি বলেন, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়ার দখলকৃত পূর্ব এবং দক্ষিণ ইউক্রেনের অঞ্চল পুনরুদ্ধার করার লক্ষ্যে পাল্টা হামলা শুরু করা হয়েছিল। তবে যুদ্ধক্ষেত্রে নানা অসুবিধার কারণে ইউক্রেনীয় বাহিনী পাল্টা আক্রমণের সেই গতি কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়।

ইউক্রেনের এই প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা মিত্রদের ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীকে আরও অত্যাধুনিক অস্ত্র সরবরাহ করার জন্য ক্রমাগতভাবে চাপ দিয়েছেন। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অত্যাধুনিক এফ-১৬ যুদ্ধবিমান এবং দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র চান তিনি।

যদিও রাশিয়ার আক্রমণের পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য দেশগুলো অব্যাহতভাবে ইউক্রেনকে সহায়তা করে আসছে। আর তাই অব্যাহত সেই সহায়তার জন্য সিএনএনের সাক্ষাৎকারে ওয়াশিংটন এবং ইউরোপীয় মিত্রদের ধন্যবাদ জানান ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট। তবে এর পাশাপাশি আবারও আরও উন্নত অস্ত্র সহায়তা চান তিনি।

জেলেনস্কি বলেন, ‘এটি (অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান হাতে পাওয়া মানে) আকাশে রাশিয়ানদের চেয়ে ইউক্রেনের এগিয়ে যাওয়া নয়। সেটি হলে তা হবে কেবল (প্রতিপক্ষের) সমান হওয়া। এফ-১৬ যুদ্ধবিমান যুদ্ধক্ষেত্রে কেবল এগিয়ে যেতেই সহায়তা করে না। এটি ছাড়া আকাশ থেকে যুদ্ধ চালানো খুব কঠিন।’

এর আগে গত সপ্তাহে জেলেনস্কি বলেছিলেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে তাদের পাল্টা আক্রমণ ‘প্রত্যাশার চেয়ে ধীরগতির’ ছিল। এ বিষয়ে খুব নির্দিষ্ট করে কিছু না বললেও তিনি দাবি করেছিলেন, পাল্টা হামলায় ইউক্রেন ‘সব দিক দিয়ে’ অগ্রগতি করেছে।

রয়টার্স অবশ্য যুদ্ধক্ষেত্রের প্রকৃত পরিস্থিতি যাচাই করতে পারেনি। এছাড়া পাল্টা আক্রমণে ইউক্রেনের সাফল্যও স্বীকার করেনি রাশিয়া। মস্কো বলেছে, ইউক্রেনের বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে তারা।

ইয়েভগেনি প্রিগোজিনের নেতৃত্বে ওয়াগনার গ্রুপের ভাড়াটে সেনাদলের স্বল্পস্থায়ী বিদ্রোহের পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার ক্ষমতা সুসংহত করার চেষ্টা করবেন বলেও জেলেনস্কি বলেছেন। মূলত বিদ্রোহের জেরে পুতিনের সাথে চুক্তি করার পর প্রিগোজিন বেলারুশে নির্বাসনে চলে গেছেন।

জেলেনস্কি বলেন, এত ঘটনার পর পুতিন কোথায় গেলেন? তিনি খুব কমই বাইরে রাস্তায় আসেন। আমরা তাকে তার অফিস ইত্যাদিতে দেখি, কিন্তু আমরা কখনোই তাকে বাইরে দেখতে পাই না।’

অবশ্য বিদ্রোহের কয়েক দিন পরে মস্কোর ক্রেমলিন কমপ্লেক্সে একটি অনুষ্ঠানে প্রায় আড়াই হাজার রুশ নিরাপত্তা কর্মীর সামনে বক্তব্য দিতে হাজির হয়েছিলেন পুতিন।

সেখানে সেসময় তিনি বলেন, ‘আপনি আমাদের মাতৃভূমিকে অভ্যুত্থান থেকে রক্ষা করেছেন। প্রকৃতপক্ষে, আপনারা গৃহযুদ্ধ থামিয়ে দিয়েছেন।’