21 November 2024

মঙ্গলবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

বাংলাদেশের প্রথম দিন শান্তময়

Share

ফটোনিউজবিডি ডেস্ক:

দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে শান্ত-জয়ের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বড় রানের ভীত পেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে সেটা কাজে লাগাতে পারেননি মিডল অর্ডার ব্যাটাররা। মুমিনুল থিতু হয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। আর টেস্টে প্রথমবার দলকে নেতৃত্ব দেওয়া লিটনও নাম লিখিয়েছেন ব্যর্থদের দলে। ফলে তিনশোর আগেই বাংলাদেশের ৫ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচে ফেরে সফরকারীরা। তবে দিনের বাকিটা সময় মিরাজ-মুশফিকের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ব্যাটে নিরাপদে পার করে বাংলাদেশ।

প্রথম ইনিংসে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে দিনশেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৬২ রান তুলেছে বাংলাদেশ। প্রথম দিনে খেলা হয়েছে মোট ৭৯ ওভার।

টস হেরে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই সাজঘরে ফেরেন জাকির হাসান। নিজাত মাসুদের লেন্থ ডেলিভারীতে ডিফেন্স করতে গিয়ে আউটসাইড এজ হয়ে বল জমা পড়ে উইকেটকিপার আফসার জাজাইয়ের গ্লাভসে। তবে খালি চোখে আম্পায়ার ভেবেছিলেন বল হয়তোবা ব্যাটে লাগেনি। ফলে তিনি আউট দেননি। তবে আফগানিস্তান রিভিও নিলে সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য হন আম্পায়ার। সাজঘরে ফেরার আগে ২ বল খেলে ১ রান করেছেন এই তরুণ ওপেনার।

জাকির দ্রুত ফিরলেও পরিস্থিতি সামলে দ্রুতই উইকেটের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন মাহমুদুল হাসান জয়। এই তরুণ ওপেনারকে সঙ্গে নিয়ে দলকে শক্ত ভিত গড়ে দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এই টপ অর্ডার জুটির দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ১১ ওভার ২ বলেই দলীয় অর্ধশতক পূর্ণ করে দল।

তিনে নেমে এদিন আক্রমণাত্মক খেলেছেন শান্ত। এই টপ অর্ডার ব্যাটার ব্যাক্তিগত অর্ধশতক পূর্ণ করেছেন মাত্র ৫৮ বলে। তার এমন ব্যাটিংয়ে ভর করেই ২১তম ওভারে দলীয় শতক স্পর্শ করে দল। দাপুটে ব্যাটিংয়ে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে ১১৬ রান তোলে লাঞ্চ বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

বিরতি থেকে ফিরেও আক্রমণাত্মক খেলেছেন শান্ত। তবে আরেক প্রান্তে টেস্ট মেজাজে ব্যাটিং করেছেন জয়। এই তরুণ ওপেনার হাঁফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন ১০২ বল খেলে। প্রথম দিনের দ্বিতীয় সেশনের প্রথম ঘন্টায় আফগানদের উইকেটবিহীন রেখেছেন এই দুই ব্যাটার।

দ্বিতীয় সেশনে পানি পানের বিরতি থেকে ফিরেই সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন শান্ত। নিজের তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি পেতে শান্ত বল খরচ করেছেন ১১৮টি। যা মিরপুরে কোনো বাংলাদেশী ব্যাটারের দ্বিতীয় দ্রুততম টেস্ট সেঞ্চুরি।

দুর্দান্ত ব্যাটিং করা জয়ের সমাপ্তিটা ছিল অনেকটা দৃষ্টিকটুই। ইনিংসের ৪৫তম ওভারে রহমত শাহর অফ স্টামের অনেক বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে স্লিপে ধরা পড়েন। অথচ পুরো ইনিংস জুড়ে খেলেছেন দেখে-শুনে। সাজঘরে ফেরার আগে তার নামের পাশে যোগ করেছেন ১৩৭ বলে ৭৬ রান। তার বিদায়ে ভাঙ্গে ২১৭ রানের দ্বিতীয় উইকেটে জুটি।

এরপর দ্রুতই ফিরেছেন মুমিনুল হকও। এই অভিজ্ঞ ব্যাটারকে হারিয়ে দল যখন কিছুটা বিপাকে তখনই ফিরেছেন শান্তও। সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে আরও বড় রানের পথেই হাঁটছিলেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। কিন্তু হঠাৎ ছন্দপতন। ৫৮তম ওভারের শেষ বলে আমির হামজাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে কাউ-কর্ণারে ধরা পড়েন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৭৫ বলে ১৪৬ রান।

৫৩ রানের ব্যবধানে তিন ব্যাটারকে হারিয়ে দল যখন বিপাকে তখন দলের হাল ধরতে উইকেটে আসেন লিটন দাস। প্রথমবার সাদা পোশাকে নেতা হিসেবে ব্যাট করতে নেমে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া তো দূরের কথা উল্টো দলের বিপদ বাড়িয়ে দ্রুত সাজঘরে ফিরেছেন। ৯ করে লিটন ফিরলে তিনশো স্পর্শ করার আগেই ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

এরপর মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে দিনের বাকিটা সময় নিরাপদে কাটিয়েছেন মুশফিক। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার দিনশেষে অপরাজিত আছেন ৪১ রানে। আর মিরাজ ৪৩ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন।