22 November 2024

মঙ্গলবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

৬ ফুট দৈর্ঘ্যরে মসজিদ টিকে আছে ২’শত বছর ধরে

Share

আশরাফ আলী:
মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার ব্রাহ্মণগাঁও এলাকা। এই এলাকায় কাজী খন্দকার মাজারে রয়েছে ছোট্ট একটি মসজিদ। চুন, সুরকি ও ইট দিয়ে তৈরি ৬ ফুট বর্গাকার মসজিদটি দেশের অন্যতম ছোট মসজিদ। একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন ইমামসহ পাঁচজন। প্রায় ২০০শত বছর ধরে মসজিদটি টিকে আছে আপন মহিমায়। স্থানীয়দের দাবি এই মসজিদটিকে প্রত্নতাত্তিক নিদর্শন হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করার ।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৬ ফুট এবং প্রস্থ ৬ ফুট। তারা ধরাণা করছেন, মসজিদটির বয়স ২০০ থেকে ৩০০ বছর হবে। সময়ে সময়ে সংস্কার করার ফলে এখনো মসজিদটির সৌন্দর্য্য বহাল রয়েছে।
এলাকার বয়স্করা জানিয়েছেন, প্রায় ২ থেকে ৩শ বছর আগে ওই এলাকার মাটির নিচে কিছু ইট পাওয়া গিয়েছিল। ইটের পাশেই ছোট এই মসজিদটির অবস্থান ছিল।
টিলার উপরে মসজিদের অবস্থান থাকায় প্রথম দেখায় বোঝার উপায় নেই এটি মসজিদ। তবে উপরিভাগের ছোট বড় গম্বুজ জানান দিচ্ছে এটি আসলে একটি মসজিদ। চুন, সুরকি ও ইট দিয়ে তৈরি এই মসজিদটির চার কোনায় থাকা চারটি কারুকার্য নান্দনিক পিলার আকৃষ্ট করছে দর্শনার্থীদের।
মৌলভীবাজার-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের মুন্সিবাজারে কাজী খন্দকার মাজারের পাশে অবস্থিত কালের সাক্ষী প্রাচীন ও ইসলামিক ঐতিহ্যের অনন্য নিদর্শনটি এলাকায় ‘গায়বি মসজিদ’ নামে পরিচিত। এক গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদের ভেতরে রয়েছে একটি মাত্র কক্ষ। ভেতরে জায়গা রয়েছে মাত্র ছয় ফুট। তবে এখন আর নামাজ আদায় করা হয় না এই মসজিদে।
ঐ এলাকার কামরান আহমদ বলেন, পূর্বপুরুষরা বলে গেছেন গভীর অরণ্য ছিল এলাকায়। জমিদারী প্রথা বিলুপ্তির সাথে সাথে বনজঙ্গল আবাদের সময় মাটির নিচে এই মসজিদ পাওয়া যায়। এর পর কালে কালে সংস্কার করা হয়। কে কখন এটি নির্মাণ করেছেন তার সঠিক কোনো তথ্য জানা যায়নি। তবে এটা প্রাচীনতম স্থাপত্য, দেশের অন্যতম সবচেয়ে ছোট মসজিদ। এই মসজিদ নিয়ে মানুষের জানার আগ্রহ আছে। তবে প্রত্নতত্ত অধিদপ্তরে তালিকায় নেই মসজিদটি। মসজিদটিকে সংরক্ষণ করে প্রত্নতাত্তিক নিদর্শন হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হলে ভালো হতো ।
কথা হয় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি প্রবীণ মুরব্বি ছাতির মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, ‘মসজিদের ভেতরে ইমামসহ পাঁচজন ব্যক্তি নামাজ পড়তে পারতেন। পরে লোকজন বেশি হওয়ায় পাশে আরেকটি মসজিদ তৈরি করেন এলাকাবাসী।’
কাজী খন্দকার মাজারের খাদিম আছকির মিয়া বলেন, ‘আমাদের দাদা ও তার পূর্ব পুরুষরাও বলতে পারেননি আসলে কতদিন আগে এই মসজিদ নির্মাণ হয়েছে। দাদার কাছে জেনেছি, তিনিও নাকি শুনেছেন ২০০ বছরের পুরোনো হবে মসজিদটি। মসজিদটি দেখার জন্য অনেক সময় লোকজন আসেন। মাঝে মাঝে রাত্রি বেলা অনেকে এসে এখানে নামাজ পড়েন।’
মাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক আহমদ আলী বলেন, ধারণা করা হয় গৌড়জনপদের মধ্যযুগের স্থাপনা এই মসজিদ। তখন এই অঞ্চলে মুসলিমদের সংখ্যা কম ছিল।
মাজার কমিটির সভাপতি মুন্সিবাজার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ছালেক মিয়া বলেন, আমি মসজিদটি সংরক্ষণের জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করবো। দাদা ও পিতামহের কাছ থেকে জানামতে এখানে পাহাড় টিলা ও গভীর জঙ্গল ছিল। মাটির নিচে মসজিদ পাওয়া গিয়েছিল এর সাথে প্রচুর ইট ছিল।
রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার মিতা বলেন, এটা সম্পর্কে আমাদের উপজেলা প্রশাসনের জানা ছিল না। আমরা স্থানীয় ইউনিয়ন চেযারম্যানের বিষয়টি জেনে কি করা যায় সেটি নিয়ে আলোচনা করে প্রদক্ষেপ নেব।

৬ ফুট দৈর্ঘ্যরে মসজিদ টিকে আছে ২’শত বছর ধরে
আশরাফ আলী, মৌলভীবাজার:
মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার ব্রাহ্মণগাঁও এলাকা। এই এলাকায় কাজী খন্দকার মাজারে রয়েছে ছোট্ট একটি মসজিদ। চুন, সুরকি ও ইট দিয়ে তৈরি ৬ ফুট বর্গাকার মসজিদটি দেশের অন্যতম ছোট মসজিদ। একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন ইমামসহ পাঁচজন। প্রায় ২০০শত বছর ধরে মসজিদটি টিকে আছে আপন মহিমায়। স্থানীয়দের দাবি এই মসজিদটিকে প্রত্নতাত্তিক নিদর্শন হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করার ।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৬ ফুট এবং প্রস্থ ৬ ফুট। তারা ধরাণা করছেন, মসজিদটির বয়স ২০০ থেকে ৩০০ বছর হবে। সময়ে সময়ে সংস্কার করার ফলে এখনো মসজিদটির সৌন্দর্য্য বহাল রয়েছে।
এলাকার বয়স্করা জানিয়েছেন, প্রায় ২ থেকে ৩শ বছর আগে ওই এলাকার মাটির নিচে কিছু ইট পাওয়া গিয়েছিল। ইটের পাশেই ছোট এই মসজিদটির অবস্থান ছিল।
টিলার উপরে মসজিদের অবস্থান থাকায় প্রথম দেখায় বোঝার উপায় নেই এটি মসজিদ। তবে উপরিভাগের ছোট বড় গম্বুজ জানান দিচ্ছে এটি আসলে একটি মসজিদ। চুন, সুরকি ও ইট দিয়ে তৈরি এই মসজিদটির চার কোনায় থাকা চারটি কারুকার্য নান্দনিক পিলার আকৃষ্ট করছে দর্শনার্থীদের।
মৌলভীবাজার-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের মুন্সিবাজারে কাজী খন্দকার মাজারের পাশে অবস্থিত কালের সাক্ষী প্রাচীন ও ইসলামিক ঐতিহ্যের অনন্য নিদর্শনটি এলাকায় ‘গায়বি মসজিদ’ নামে পরিচিত। এক গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদের ভেতরে রয়েছে একটি মাত্র কক্ষ। ভেতরে জায়গা রয়েছে মাত্র ছয় ফুট। তবে এখন আর নামাজ আদায় করা হয় না এই মসজিদে।
ঐ এলাকার কামরান আহমদ বলেন, পূর্বপুরুষরা বলে গেছেন গভীর অরণ্য ছিল এলাকায়। জমিদারী প্রথা বিলুপ্তির সাথে সাথে বনজঙ্গল আবাদের সময় মাটির নিচে এই মসজিদ পাওয়া যায়। এর পর কালে কালে সংস্কার করা হয়। কে কখন এটি নির্মাণ করেছেন তার সঠিক কোনো তথ্য জানা যায়নি। তবে এটা প্রাচীনতম স্থাপত্য, দেশের অন্যতম সবচেয়ে ছোট মসজিদ। এই মসজিদ নিয়ে মানুষের জানার আগ্রহ আছে। তবে প্রত্নতত্ত অধিদপ্তরে তালিকায় নেই মসজিদটি। মসজিদটিকে সংরক্ষণ করে প্রত্নতাত্তিক নিদর্শন হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হলে ভালো হতো ।
কথা হয় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি প্রবীণ মুরব্বি ছাতির মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, ‘মসজিদের ভেতরে ইমামসহ পাঁচজন ব্যক্তি নামাজ পড়তে পারতেন। পরে লোকজন বেশি হওয়ায় পাশে আরেকটি মসজিদ তৈরি করেন এলাকাবাসী।’
কাজী খন্দকার মাজারের খাদিম আছকির মিয়া বলেন, ‘আমাদের দাদা ও তার পূর্ব পুরুষরাও বলতে পারেননি আসলে কতদিন আগে এই মসজিদ নির্মাণ হয়েছে। দাদার কাছে জেনেছি, তিনিও নাকি শুনেছেন ২০০ বছরের পুরোনো হবে মসজিদটি। মসজিদটি দেখার জন্য অনেক সময় লোকজন আসেন। মাঝে মাঝে রাত্রি বেলা অনেকে এসে এখানে নামাজ পড়েন।’
মাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক আহমদ আলী বলেন, ধারণা করা হয় গৌড়জনপদের মধ্যযুগের স্থাপনা এই মসজিদ। তখন এই অঞ্চলে মুসলিমদের সংখ্যা কম ছিল।
মাজার কমিটির সভাপতি মুন্সিবাজার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ছালেক মিয়া বলেন, আমি মসজিদটি সংরক্ষণের জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করবো। দাদা ও পিতামহের কাছ থেকে জানামতে এখানে পাহাড় টিলা ও গভীর জঙ্গল ছিল। মাটির নিচে মসজিদ পাওয়া গিয়েছিল এর সাথে প্রচুর ইট ছিল।
রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার মিতা বলেন, এটা সম্পর্কে আমাদের উপজেলা প্রশাসনের জানা ছিল না। আমরা স্থানীয় ইউনিয়ন চেযারম্যানের বিষয়টি জেনে কি করা যায় সেটি নিয়ে আলোচনা করে প্রদক্ষেপ নেব।