

স্টাফ রিপোর্টার::
ধর্ষণের শিকার বড়লেখার সেই থ্যালেসেমিয়া রোগে আক্রান্ত সাড়ে তিন বছরের শিশুটির পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এম নাসের রহমান। সোমবার রাতে শিশুটির মাকে ফোন করে তার চিকিৎসার সব দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানান তিনি।
নাসের রহমান সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান এর পুত্র ও মৌলভীবাজার-৩ (সদর-রাজনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং বিএনপির জাতীয় নির্বাহি কমিটির সদস্য।
সোমবার (১০ মার্চ) রাত সাড়ে দশটায় মৌলভীবাজার থেকে একটি প্রতিনিধিদল নির্যাতনের শিকার শিশুটির মায়ের সঙ্গে দেখা করেন। এর পর ফোনে কথা বলেন নাসের রহমান। এসময় তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার পাশাপাশি সব ধরনের সহায়তারও আশ্বাস দেন তিনি। এবং ভুক্তভোগী মায়ের করা মামলা পরিচালনায় আইনজীবির খরচ তার পক্ষ থেকে বহন করা হবে যেন ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা যায়।
নাসের রহমানের ফোন পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন শিশুটির মা। তখন তিনি নিজের জীবনের শঙ্কার কথা তুলে ধরেন। বলেন, বাসার মালিক আমাকে থ্রেড দিচ্ছেন। আমি কেন শিশুটির নির্যাতনের রক্তমাখা পড়নের প্যান্ট বাসার মালিক নিয়ে গেছেন, একথা পুলিশকে কেন বলেছি। ঘটনার দিন তারা মেয়েকে নিয়ে হসপিটালে পর্যন্ত যেতে দেয়নি। বাসার মালিক ওইদিন শিশুটির নির্যাতনের প্রমাণ আলামত কাপড় চোপড় নিয়ে যেতে চাচ্ছিলেন। আমাকে তারা সকলে ঘিরে রেখে মানসিক র্টচার করে হসপিটালে যাতে না যেতে পারি। তখন আমি একপ্রকার সাহস নিয়ে সরকারি হসপিটালে যাই। সেই বেবি ডাইপার প্যান্ট ও পড়নের প্যান্ট এখন পুলিশের কাছে। ডিএনএ টেস্টও চলে এসেছে। এ কথা কেন পুলিশকে বলেছি সেজন্য। এখন আমার প্রানের কোন নিরাপত্তা নেই। এসময় নাসের রহমান তাকে ভয় না করার জন্য বলেন এবং এ মামলায় যেন সঠিক চার্জশীট হয়ে ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হয় সেজন্য তিনি পুলিশ প্রশাসনে বিষয়টি নিয়ে ফলো আপ নিবেন।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন-মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক জনি আহমেদ, ছাত্রদল নেতা আখলাকুর রহমান জাবের, জামিল আহমেদ তানভীর ও জুবেদ হোসেন।
জনি আহমেদ বলেন, আমরা নাসের রহমান এর পক্ষে শিশুটির জন্য বিভিন্ন ফল ও চকলেট নিয়ে যাই। এসময় শিশুটির মায়ের হাতে নগদ ২০ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করি। এসময় শিশুটির যাবতীয় চিকিৎসা ব্যয় ও আইনী সহায়তা নাসের রহমান এর পক্ষ থেকে দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, বড়লেখায় চকলেট কিনতে গিয়ে কিশোর দোকানদার কর্তৃক জোরপূর্বক ধর্ষণের শিকার হয় সাড়ে ৩ বছরের ওই শিশু। শিশুটি থ্যালেসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। শিশু ধর্ষণের ঘটনাটি সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে পৌরসভার গাজিটেকা আইলাপুরের খাদিজা ভেরাইটিজ ষ্টোরে ঘটে। এ ঘটনায় ধর্ষিতা শিশুর মা থানায় মামলা করলে অভিযুক্ত পৌরসভার গাজিটেকা-আইলাপুর এলাকার খাদিজা ভেরাইটিজ ষ্টোরের মালিক নজরুল ইসলামের ছেলে কিশোর রেদওয়ান ইসলাম আরিফ (১৭) কে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আহত অবস্থায় ওই শিশুটিকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে শিশুটি সিলেট রিকাবিবাজারস্থ আধুনিক হসপিটালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।