

স্টাফ রিপোর্টার::
মৌলভীবাজারে ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম হযরত শাহজালাল (র.) এর সফরসঙ্গী হযরত শাহ মোস্তফা (র.) এর ৬৮৪তম ওরসকে কেন্দ্র করে মাজারের আশপাশে বসেছে বিশাল মেলা। এই মেলাকে মৌলভীবাজারের লোকজন শাহ মোস্তফার মেলা নামে অভিহিত করেন। প্রায় ৭শত বছর ধরে এই মেলা মৌলভীবাজারে হয়ে আসছে। মেলাকে কেন্দ্র করে বিরাজ করে উৎসবের আমেজ।
প্রতিবছরের ১ মাঘ ওরসকে ঘিরে শহরের শাহ মোস্তফা সড়কসহ আশপাশের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মেলা বসে। মেলার প্রথম দিন রাত থেকে শাহ মোস্তফা সড়কটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। মেলা শেষ হবার পরদিন যানবাহন চলাচলের জন্য সড়কটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এই সময়ে বিরাজ করে উৎসবের আমেজ।
মেলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পাশাপাশি কুটির শিল্প, শিশুদের নানান ধরনের খেলনা, নাগরদোলা, ম্যাজিক শো, কাঁপড়ের দোকান, কসমেটিকস, বাহারি খাবারের দোকানসহ বিভিন্ন ধরণের দোকান নিয়ে বসেন বিক্রেতারা। দরগা প্রাঙ্গন সহ আশপাশের এলাকায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা স্টলগুলো দুই থেকে তিন দিন থাকে । ওরস ও মেলাকে কেন্দ্র করে নেওয়া হয় জোরদার নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
গতকাল মঙ্গলবার ১৪ জানুয়ারি বাদ আসর মিলাদ মাহফিল, গরু জবেহ ও বাদ এশা জিকির আযকার এর মাধ্যমে শাহ মোস্তফার মাজারে ওরসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। বুধবার সকাল ৯টায় গিলাফ চড়ানো, বাদ জোহর শিরনি বিতরণ, বাদ এশা আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে দুইদিন ব্যাপী ওরসের সমাপ্তি হবে।
সেখানে সাদিকুর রহমান রাজন নামের একজনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, মেলাকে কেন্দ্র করে মৌলভীবাজারে উৎসবের আমেজ তৈরী হয়। আমরা ছোটবেলা থেকে এই মেলায় যাই। অনেকেই মেলায় কেনাকাটা করার জন্য আগে থেকেই টাকা জমেিয় রাখতাম। যাতে মেলা শুরু হলে পছন্দের জিনিষ ক্রয় করতে পারি। আজকে ছোট ভাইয়ের জন্য খেলনা, বাহারি খাবার সহ বিভিন্ন জিনিষ ক্রয় করেছি।
মেলায় আগত শাহরিয়ার সাকিব নামের একজন জানান, প্রতিবছর শাহ মোস্তফার ওরসকে কেন্দ্র করে বিশাল মেলার আয়োজন হয়। এখানে অনেকেই মাজারে গিয়ে জেয়ারত করেন, কেউ দরগার পুকুরে গিয়ে গজার মাছকে খাবার দেন, কেউবা শিরণী খেতে যান, আবার অনেকেই আমল বন্দেগী করেন।
তিনি বলেন, এখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে হুযুরগণ এসে তালিম দেন, যিকির আযকার করেন, দোয়া করেন। ওরস এবং মেলা একই সাথে হয়। যার জন্য জেলা সদরের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার লোকজন এখানে আসেন। সবার মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে।
মৌলভীবাজারে পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, যেভাবে জনগণ আসে আমরা ঠিক সেভাবে নিরাপত্ত¡া ব্যবস্থা রাখি। কোন সমস্যা নেই আমরা মনে করি। ধর্মীয় একটা বিশ^াসের আলোকে এই মেলা বা ওরস হয়। সেটাকে কেন্দ্র করে নির্দিষ্ট সময়ে দোকান পাঠ বসে। মানুষ আসে ছোট খাটো জিনিষপত্র বিক্রি হয়।
তিনি বলেন, মেলাকে কেন্দ্র করে আমাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্ত¡া ব্যবস্থা আছে। টহল পার্টি আছে, সাদা পোশাকের পুলিশ আছে, কমিটির লোকজন যারা আছেন তারাও সহযোগিতা করছেন, তাদের স্বেচ্ছাসেবকও আছেন। সবমিলিয়ে নিরাপত্ত¡া ব্যবস্থা সন্তোষজনক।