স্টাফ রির্পোটার::
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এম পি এম
নাসের রহমান বলেছেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক নেতা নন । শেখ হাসিনাকে ভারত ফ্লাট করেছিল তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য। এবং শেখ হাসিনা ভারতের নির্দেশনায় যা যা দরকার ছিল সব দিয়েছেন । দিয়ে তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন আমি যা ভারতকে দিয়েছি ভারত কখনোই ভুলতে পারবে না। এটা কোনো দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদের বক্তব্য হতে পারে না । আবার তিনি গর্ব করে বলতেন তার পিয়নে ৪ কোটি টাকা বানিয়ে হেলিকপ্টার চড়ে। এতে করে শেখ হাসিনা আমাদের দেশের রাজনীতি যে কোথায় নিয়ে নামিয়েছে।
তিনি বলেন, এই শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এজেন্ডা নিয়ে আসছিল। ভারত তাকে বলে দিয়েছে তোমার প্রথম কাজ হলো- বেগম খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ী থেকে বাহির করা। সে এটা করেছে। এর সাথে সাথে দেশের তত্ববধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করার কথাও বলে। সেটাও করেছে। কারণ তার ভয় ছিল তত্ববধায়ক থাকলে তো ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ আর ক্ষমতায় আসতে পারবে না। এবং ভারতে তাকে এও বলে দিয়েছে তুমি যদি ক্ষমতায় থাকতে চাও তাহলে আগে তত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে। অথচ এই ফ্যাসিস্ট হাসিনা তত্বাবধায়ক ব্যবস্থা আনার জন্য ১৯৯৪ সাল থেকে ৯৬ সালের মার্চ পর্যন্ত সারাদেশে ১৬৪ দিন হরতাল আর অবরোধ করেছে। ঐসময় এ হরতাল অবরোধ করে দেশের লক্ষ লক্ষ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি সাধন করেছে। শুধু তার ক্ষমতায় যাবার জন্য। যে মহিলা ১৬৪ দিন হরতাল অবরোধ করে এই মহিলাই আবার তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে। এটা কি কোন দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদের আচরণ হতে পারে?। এদেরকেই দেশের মানুষ কুলাঙ্গার বলে ডাকে। এরা দেশের ভালো করার জন্য রাজনীতি তে আসেনি।
নাসের রহমান আরও বলেন,
শেখ হাসিনা কি দেশ ছেড়ে একবার পালিয়েছে? না সে বহুবার পালিয়েছে । ১৯৮১ সালে ৩০ শে মে যেদিন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কে চট্টগ্রামে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয় সেদিন আখাউড়া বর্ডার দিয়ে দেশে ছেড়ে তিনি বোরকা পরে ভারতে পালিয়েছিলেন। এর পর ওয়ান ইলেভেনেও দেশে ছেড়ে বিদেশে পালিয়েছিলেন। তিনি আবার দম্ভ করে বলতেন শেখ হাসিনা কখনো পালায় নাই, শেখ হাসিনা কখনো পালায় না। তাহলে ৫ আগষ্ট কে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিল? । সেদিন খুনি এই হাসিনা ছাত্র জনতার অভ্যূত্থানের ভয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন। সাড়ে ১৫ বছর রাম রাজত্ব করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেন? ।
তিনি বলেন, এ দেশটাকে ধ্বংস করার জন্য হিটলারের প্রেতাত্বা আওয়ামী লীগারদের মাঝে জন্মেছে। আর আওয়ামী লীগকে তার বাবাই কবর রচনা করে দিয়ে গিয়েছিল ১৯৭৫ সালে। আর শেখ হাসিনার অধিনে আওয়ামীহ আসার পর গুম খুন গণহত্যা চালিয়ে তাদের রাজনীতি করার সমস্ত অধিকার হারিয়েছে। স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগ কে দ্বিতীয় বার পূণজন্ম দিয়েছিলেন। আজ তারা বলে স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান নয়। তাহলে কে দিয়েছিল? তার বাবা দিয়েছিল কেমন করে দিয়েছিল বিডিআর এর তার বার্তা দিয়ে?। ওয়্যারলেস দিয়ে। তো ওয়্যার লেস টু ওয়্যার লেস। দুইটা ওয়্যার লেস দিয়ে যদি কথা হয় তাহলে সারাদেশের মানুষ স্বাধীনতার ঘোষনা জানালেন কিভাবে ?। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বার বার স্বাধীনতার ঘোষনা পাঠ করেন। নাসের রহমান বলেন- বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে আওয়ামী লীগের কোন নেতা মারা গিয়েছেন নাম বলেন তো? এরা বলতো মুক্তি যুদ্ধের স্বপক্ষের দল? এদের দলে কি একজন বীর উত্তম, বীর বিক্রম,বীর প্রতীক আছে ? একজনও নেই। তাহলে কিভাবে বলে আ. লীগ মুক্তি যুদ্ধের স্বপক্ষের দল। আর আমাদের দলে ৬ জন বীর প্রতীক,বীর উত্তম, বীর বিক্রম আছেন। আর আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা তিনি নিজেই বীর উত্তম ছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে সরাসরি অংশ নেন।
নাসের রহমান বলেন, এই হাসিনা ভারতের পুতুল। তাকে ভারত যেভাবে নাচায় সেভাবেই নাচে। ভারতের দালাল কে দেশ বাসী এখন ঠিকই বুঝে গেছে। সে ভারতে পালিয়ে গিয়ে বলে ৫ আগস্ট না কি দেশে আরও হানাহানি হতো সে জন্য তিনি না কি দেশে ছেড়ে পালিয়েছেন। কতবড় মিথ্যাচার। মিথ্যাবাদী। সে ক্ষমতা আকঁড়ে রাখার জন্যে শেষ সময় পর্যন্ত নির্বিচারে মুক্তিকামী ছাত্র জনতার ওপর গণহত্যার চালানোর নির্দেশনা দিয়েছিল। কিন্তু সেদিন তার নির্দেশনা দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনী পালন করেনি।
নাসের রহমান আরও বলেন, আগামী ২০২৫ সাল বাংলাদেশের রাজনীতির নতুন অধ্যায় সৃষ্টি হবে। যেখানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যে দলটি গণহত্যকারী হিসেবে দেশবাসী চিহ্নিত করেছে। এদের কিছু থাকবে না। এ গনহত্যাকারী দলটি দীর্ঘ দিন দেশের মানুষের ওপর জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছিল। নাসের রহমান বলেন- আওয়ামী লীগ কখনো জনগনের দল ছিল না। আওয়ামী লীগ ছিল পুলিশের দল,প্রশাসনের দল আর আদালতের দল৷ এ তিনটা পেলে তার জনগনের দরকার নেই । এবং এ তিনি দিয়েই সাড়ে ১৫টা বছর দেশে রাম রাজত্ব করে গেছে। শুধু রাম রাজত্ব নয় দেশকে লুটেপুটে খেয়ে গেছে।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মৌলভীবাজার পৌরসভা প্রাঙ্গনে আয়োজিত মৌলভীবাজার উপজেলা ও পৌর বিএনপির কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন।
জেলা বিএনপির আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ূনের সভাপতিত্বে ও
জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজানের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রবাসী বিএনপি নেতা বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফয়সল আহমেদ চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন- জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন মাতুক,মোশাররফ হোসেন বাদশা,এম এ মুকিত,আশিক মোশাররফ, মোহাম্মদ হেলু মিয়া,ফখরুল ইসলাম,বকসী মিছবাউর রহমান,মতিন বকস,আব্দুর রহিম রিপন,মনোয়ার আহমেদ রহমান,স্বাগত কিশোর দাশ চৌধুরী, আবুল কালাম বেলাল,আনিসুজ্জামান বায়েস, যুক্তরাজ্যস্থ জাতীয়তাবাদী ফোরামের সভাপতি শাহ সাইফুল আখতার লিখন, সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মারফ আহমেদ,পৌর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব সরওয়ার মজুমদার ইমন প্রমূখ।
এদিকে কর্মী সমাবেশ যোগদিতে দুপুর ১২ টা থেকেই শহরে ও উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিএনপির শত শত নেতাকর্মী জিয়া পরিবারের নামে স্লোগান টুপি ব্যানার নিয়ে কর্মী সমাবেশে মিছিল সহকারে যোগ দেয়। মূলত: কর্মী সমাবেশ টি জনসমাবেশ রুপান্তরিত হয়।