স্টাফ রিপোর্টার::
ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশ হাই কমিশনে ঢুুকে উগ্রবাদীদের আক্রমণের ঘটনাটি ন্যাক্কারজনক ও অশুভ এক ইঙ্গিত বলে মন্তব্য করেছেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ লাখো প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছে দিল্লীর দাসত্ব করতে নয়। ভারত সরকারকে বুঝতে হবে, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। এটা ভূটান কিংবা সিকিম নয়। এটা ভারতের কোন প্রদেশও নয়। যে সেবাদাসী হতে চেয়েছিলেন সেই দাসী এখন আপনাদের পদতলে। ক্ষমতা হারিয়ে বিতাড়িত হওয়ায় হাসিনার চেয়ে বেশি পাগল হয়ে গেছে ভারতীয় উগ্রবাদীরা। মরিয়া হয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। ত্রিশ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে এদেশ স্বাধীন হয়েছে। এদেশের স্বাধীনতা অক্ষূন্ন রাখতে এদেশের ছাত্র-জনতারাই যথেষ্ট।
ভারতে আগরতলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে এবং দেশের কয়েকটি সীমান্তে ভারতীয় উগ্রবাদী জঙ্গীগোষ্ঠীর হামলার প্রতিবাদে সোমবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি ও অংগ সংগঠনের এই বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের চৌমুহনা থেকে বের হয়। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে এম সাইফুর রহমান সড়কে সমাবেশে মিলিত হয়। এতে আরো বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান ভিপি মিজান।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল ওয়ালি সিদ্দিকি, আব্দুল মুকিত, মো. ফখরুল ইসলাম, বকসি মিছবাহউর রহমান, আব্দুল হক, মাহমুদুর রহমান, স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরী, আবুল কালাম বেলাল, গাজী মারুফ আহমদ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুহিতুর রহমান হেলাল, ছাত্রদলের সভাপতি রুবেল মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আকিদুর রহমান সোহান, কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক জনি আহমেদ প্রমুখ।
তিনি বলেন, ভারতের তাবেদার এই স্বৈরাচারীনি শেখ হাসিনা। ভারতে পলায়ন করে শেখ হাসিনা সেখান থেকে এদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কলকাটি নাড়ছে। এই ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা জানাই। এটা ভারতের তাবেদার রাষ্ট্র নয়। তাদের মদদপুষ্ট শেখ হাসিনার রাষ্ট্র নয়। এটা একটি গণবিপ্লবের মাধ্যমে গঠিত সরকার। জনগণের ম্যানডেট নিয়ে, জনগণেন সমর্থরে একটি সরকার। এই ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণ রুখে দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
ময়ূন বলেন, আগরতলায় কূটনৈতিক মিশনের ওপর এধরনের নজিরবিহীন হামলা ভিয়েনা কনভেনশন অন ডিপ্লোমেটিক রিলেশন, ১৯৬১ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ভারতীয় সরকার হামলার জন্য দুঃখ প্রকাশের নাটক করলেও, অতীতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের আগ্রাসী হস্তক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে, যা আরও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। ভারতের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী আমাদের হাইকমিশনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তা কর্মচারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এই অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের উচিত হবে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সহায়তা চাওয়া। আমরা ভারতের উগ্রবাদীদের বলব- আপনাদের বন্ধুত্ব তো শেখ হাসিনার সঙ্গে। সেই বন্ধুত্ব রক্ষায় বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে যে প্রকাশ্যে শত্রুতায় নেমেছেন সেটা সৎ প্রতিবেশী সুলভ আচরণ নয়। হাজার হাজার মানুষ হত্যা করে আপনাদের বন্ধু হাসিনা আপনাদের কাছে আশ্রয় পেয়েছে। তাকে নিয়ে সন্তুষ্ট থাকুন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান ভিপি মিজান বলেন, এই স্বৈরাচারীনি হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে, ভারতে বসে দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। দীর্ঘ সাড়ে পনেরো বছর লুটপাট জুলুম নির্যাতন করে, বাংলাদেশের হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। এই টাকা খরচ করে ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে বাংলাদেশ জনগণ প্রস্তুত রয়েছে।