ফটোনিউজবিডি ডেস্ক::
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার পর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী হামাসের বিষয়ে যে লক্ষ্য নিয়েছিল ইসরায়েল, তা ইতোমধ্যে পূরণ হয়েছে বলে মনে করে দেশটির সবচেয়ে বিশ্বস্ত মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন আরও মনে করে, এখন গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শেষ করার সময় এসেছে।
গাজা যুদ্ধ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এ অবস্থান স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন দেশটির বিদায়ী পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। বুধবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, “ইসরায়েল আমাদের বলেছিল যে গাজায় তাদের সামরিক অভিযান চালানোর মূল লক্ষ্য হামাসকে অকার্যকর করা এবং ৭ অক্টোবরের হামলার জন্য দায়ীদের হত্যা করা।”
“ওয়াশিংটন মনে করে গাজায় ইসরায়েলের নেওয়া দু’টি লক্ষ্যই পূরণ হয়েছে এবং এখন সময় এসেছে এই যুদ্ধ শেষ করার।”
আগের দিন মঙ্গলবার ইসরায়েলের স্ট্র্যাটেজিক অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক মন্ত্রী রন দারমারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ব্লিনকেন। সেই বৈঠকের পরের দিন এই মন্তব্য করলেন তিনি।
গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলকে বিশেষ সতর্কবার্তাও দিয়েছেন ব্লিঙ্কেন। বলেছেন, “ইসরায়েল যদি শিগগিরই যুদ্ধ না থামায়, তাহলে মানবতাবিরোধী অপরাধের মুখে পড়তে হবে দেশটিকে। আর যদি যুদ্ধ থামাতে চায়, তাহলে এই পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার একটি পরিকল্পনা ওয়াশিংটনের হাতে রয়েছে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হলে ইসরায়েল যেমন সহজে এই যুদ্ধ থেকে বেরিয়ে আসবে, তেমনি হামাসেরও আর আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার অবস্থা থাকবে না।”
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা এবং ২৪২জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায়। হামাসের হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের উদ্ধারে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ থেকে বার বার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জনানো হলেও তা উপেক্ষা করে এখনও গাজায় অভিযান জারি রেখেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে গাজায় নিহত হয়েছেন ৪৩ হাজার ৬ শতাধিক ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও ১ লক্ষাধিক মানুষ।
এছাড়া যুদ্ধের জেরে গাজায় খাদ্য, সুপেয় পানি এবং ওষুধের ভয়াবহ সংকট চলছে। ভূখণ্ডটিতে বসবাসকারী প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনির প্রায় সবাই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং হামাসের কব্জায় থাকা জিম্মিদের মুক্ত করতে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতার— ৩ দেশ। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু অভিযানে বিরতি দিতে রাজি না হওয়ায় সেসব চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
তবে গত মাসে কাতার জানিয়েছে, হামাস এবং ইসরায়েল— কোনো পক্ষই যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তরিক না হওয়ায় মধ্যস্থতার ভূমিকা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিচ্ছে দোহা।
সূত্র : আরটি