27 December 2024

মঙ্গলবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

কুশিয়ারা নদীর নৌকা বাইচে হাজারো মানুষের ঢল

Share

স্টাফ রিপোর্টার::

থৈ থৈ জল, ঢাক-ঢোলের তালে তালে গ্রাম বাংলার গান আর মাঝি-মাল্লার বৈঠার ছন্দ মাতিয়ে তোলে কুশিয়ারা নদী। মৌলভীবাজারে আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য ও শতবর্ষের প্রাচীন সংস্কৃতির অন্যতম অনুষঙ্গ নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গ্রামীণ লোক সংস্কৃতির সেই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের কুশিয়ারা নদীতে হামরকোনা গ্রামবাসী এ আয়োজন করেন। ঐতিহ্যের এই নৌকা বাইচ উপভোগ করতে নদী তীরে ঢল নামে মানুষের।

সোমবার (২১ অক্টোবর) পড়ন্ত বিকেলে এই নৌকা বাইচ উপভোগ করতে কয়েক হাজার মানুষ বাহাদুরপুর এলাকায় জড়ো হন। পুরুষের পাশাপাশি নারী ও শিশুদের উপস্থিতিও ছিলো চোখে পড়ার মতো।

নৌকা বাইচ দেখতে আসা রফিকুল বলেন, নৌকা বাইচ গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। এ সংস্কৃতি হারিয়ে যাচ্ছে। এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন‍্য সকল মহলকে এগিয়ে আসার দরকার।

আরেক দর্শক নিজাম বলেন, নৌকা বাইচ দেখতে এসে খুব আনন্দ লাগছে। আমার স্বজনকে নিয়ে এসেছিলাম তারাও আনন্দিত।

সিলেট বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রঙবেরঙের পোশাক পড়ে বাহারি নৌকা নিয়ে হাজির হন নৌকার মালিক ও বাইচে অংশগ্রহণকারীরা। সোনার তরী, হামজার তরী, কুশিয়ারার তরী, রঙ্গিণপ্রবণসহ ১২টি নৌকা নিয়ে তারা বাইচে অংশগ্রহণ করেন।

নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী হামজার তরী নৌকার মালিক আব্দুল হাই বলেন, আমরা পুরস্কারের আশায় এখানে আসিনি। মানুষের আনন্দে দিতে এসেছি।

মৌলভীবাজারের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি এম নাসের রহমান বলেন, হারিয়ে যাওয়া গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতেই এই আয়োজনকে আমি উৎসাহ দিতে এসেছি। একটা সময় নদী-হাওরে প্রতিবছর নৌকাবাইচ হলেও বিভিন্ন কারণের পাশাপাশি হাওর নদী ভরাট হয়ে নাব্যতা সংকট নৌকা বাইচ না হওয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। প্রতিবছর ঐতিহ্যের নৌকা বাইচের আয়োজন হলে আমি সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো।  

প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার মোটরসাইকেল, দ্বিতীয় পুরস্কার ফ্রিজ, তৃতীয় পুরস্কার একটি টেলিভিশন। চূড়ান্ত রাউন্ডে শাহ মোস্তফার তরী চ্যাম্পিয়ন, রানার্সআপ শাহ পরাণের তরী, তৃতীয় কুশিয়ারা তরী ও চতুর্থ স্থান লাভ করেছে কানাইশা তরী। অতিথিবৃন্দ বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন এবং অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকটি নৌকাকেই আকর্ষণীয় পুরস্কার দেওয়া হয়।