স্টাফ রিপোর্টার::
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ফুলতলা চা বাগানে প্রায় তিন মাস ধরে ১৪শত চা শ্রমিকের মজুরী ও রেশন বন্ধ রয়েছে। যার জন্য দূর্ভোগের শেষ নেই তাদের। শ্রমিকরা অভিযোগ করছেন দি নিউ সিলেট টি এস্টেটস লিমিটেড এর মালিকানাধীন ওই বাগান কর্তৃপক্ষ নিয়মিত মজুরী না দিয়ে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।
মজুরীর দাবীতে শ্রমিকরা কর্মবিরতি মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে আসছেন। স্থানীয় প্রশাসন ও জন প্রতিনিধির আশ্বাসে বিশ্বাসী হয়ে পাতা উত্তোলনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, অনেক চেষ্টা করে তারা এক সপ্তাহের মজুরী প্রদান করেছেন।
শ্রমিকরা বলছেন, ১১ সপ্তাহের পর এক মজুরী পেয়ে কি হবে। আগে ঋণ পরিশোধ করবো না সংসার চালাবো। বকেয়াসহ মজুরী না পেলে আমাদের অর্ধাহারে থাকতে হবে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, বাগান মালিক নানা অজুহাত দেখিয়ে শ্রমিকদের মজুরী বন্ধ রেখেছেন। গুঞ্জন রয়েছে তিনি দেশের বাহিরে চলে গেছেন। এরপর থেকে বাগানে অচলাবস্থা বিরাজ করছে।
পাতা উত্তোলনের ভর মৌসুমে শ্রমিকরা কাজ না করলে উৎপাদনে বড় ক্ষতির শঙ্কা দেখা দিতে পারে মনে করে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
কথা হয় বাগানের শ্রমিক পরিবারের মিনতী ভোজনের সাথে তিনি বলেন, জেলার সীমান্তবর্তী ফুলতলা চা বাগান ভালো মানের বাগান। হঠাৎ মালিক পক্ষের অসহযোগিতায় প্রায় তিন মাস ধরে শ্রমিকদের রেশন ও মজুরী বন্ধ হয়ে যায়। এতে বিপাকে পড়ে দিনমজুর শ্রমিকরা। শ্রমিকরা দাবী দাওয়া নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম শুরু করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কর্ণপাত করেননি।
বাগান পঞ্চায়েতের সাধারণ সম্পাদক দিপচান গোয়ালা বলেন, আমাদের বাগানে ১৪শ’ শ্রমিক রয়েছেন। মালিকপক্ষ দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও বন্যার অজুহাত দেখিয়ে ১১ সপ্তাহ ধরে রেশন ও মজুরী বন্ধ করে রেখেছেন। এনিয়ে আমরা বার বার যোগাযোগ করলেও কোন সুরাহ হয়নি। আমরা দাবী আদায়ের লক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করি। শ্রমিকদের অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটছে। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের জানানো হলে তারা উদ্যোগ নিয়েও সমাধান করতে পারেনি। তাদের প্রচেষ্টায় মাত্র এক সপ্তাহের মজুরী প্রতিজনে ১ হাজার ২০ টাকা পেয়েছেন। কিন্তু রেশন দেওয়া হয়নি। এই টাকা দিয়ে শ্রমিকরা ঋণ পরিশোধ করবেন না সংসারের খরচ চালাবেন। এনিয়ে তারা পড়েছেন বিপাকে। ধারাবাহিক ভাবে মজুরী প্রদান না করলে শ্রমিকরা অনাহারে অর্ধাহারে থাকবে। শ্রমিকরা বাগান রক্ষার স্বার্থে এবং চা পাতা উত্তোলনের ভর মৌসুম থাকায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
কথা হয় জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম শেলুর সাথে তিনি বলেন, বাগানের অবস্থা ভালো না। বিষয়টি স্থানীয় ও উর্ধতন প্রশাসনের জানা রয়েছে। বাগান চালু রাখার জন্য এক সপ্তাহের মজুরী প্রদান করা হয়েছে। বাগান ম্যানেজারকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে।
জুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাবলু সুত্রধর বলেন, এখানে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এসে পরিদর্শন করেছেন। শ্রমিকদের এক সপ্তাহের মজুরী প্রদান করা হয়েছে। মজুরী প্রদান অব্যাহত থাকবে কি না। এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করবো।