স্টাফ রিপোর্টার::
নতুন গেজেট বাতিল করে চা শ্রমিকদের মজুরি নূন্যতম ৫শত টাকা করার দাবি জানিয়েছেন চা শ্রমিকরা।
রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শ্রীমঙ্গল শহরের চৌমুহনা চত্বরে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে সমাবেশ এবং বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। একই দাবীতে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব মোড়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে চা শ্রমিক ছাত্র ও যুব সমাজ। এসময় দাবি আদায় না হলে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা।
চা শ্রমিকদের মজুরি মাত্র ৮.৫০ টাকা বৃদ্ধি বাতিল করে দৈনিক নগদ মজুরি ৫০০ টাকা নির্ধারণ ছাড়াও অন্যান্য দাবীগুলো হলো রেশন-আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা সহ আনুষাঙ্গিক সুবিধা বৃদ্ধি করা, বন্ধ ও রুগ্ন চা বাগানের লিজ বাতিল করে রাষ্ট্রীয়ভাবে বাগান পরিচালনা করে চা শ্রমিকদের জীবন জীবিকা রক্ষা করা, মালিকপক্ষের দালাল নেতৃত্ব অপসারণ করে আপোষহীন বিপ্লবী ধারার শ্রমিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে ভূমি অধিকার নিশ্চিত করা।
মৌলভীবাজারের মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন চা শ্রমিক সন্তান অজিত বুনার্জি, নয়ন কৈরীসহ আরো অনেক। এসময় তারা ১১ দফা দাবি উপস্থাপন করেন এবং সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
শ্রীমঙ্গলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিপ্লব মাদ্রাজি পাশীর সভাপতিত্বে এবং সাংগঠনিক সম্পাদক কিরণ শুক্ল বৈদ্যের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ মৌলভীবাজার জেলা সমন্বয়ক ও চা শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট মঈনুর রহমান মগনু, সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ও সংগঠনের উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট আবুল হাসান, চা শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক দীপংকর ঘোষ, অর্থ সম্পাদক প্রেম কুমার পাল, সদস্য ময়না রাজভর, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ নন্দী, মৌলভী চা বাগানের শ্রমিক নেতা দ্বীপচান তেলি, মাথিউড়া চা বাগানের আবুল কালাম আজাদ, লালন রাজভর, ধলই চা বাগানের উজ্জ্বল কৈরি, মিরতিংগা চা বাগানের ইমরান নাজির প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে চা শ্রমিকদের মানুষ হিসেবে বিবেচনা না করে চা শ্রমিকদের ভোটব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করেছে। অবিভক্ত ভারতবর্ষের বিভিন্ন দারিদ্র্য পিরিতি অঞ্চল থেকে বৃটিশ চা সরকার চা শ্রমিকদেরকে মিথ্যা আশ্বাস ও প্রতারণা করে চা শিল্পে নিয়োগ করে ছিল। প্রকারান্তরে বৃটিশরা চা বাগানে দাস প্রথার সূচনা করেছিল। সেই মজুরি দাসত্ব থেকে চা শ্রমিকরা আজও বের হতে পারে নি। সূচনালগ্ন থেকেই চা শ্রমিকরা ন্যায়সংগত মজুরি, আধুনিক শিক্ষা, চিকিৎসা, আবাসন, ভূমি অধিকার, অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার থেকে শ্রমিকরা বঞ্চিত ছিল। বৃটিশ-পাকিস্তান উপনিবেশিক শাসন অবসানের পর স্বাধীন বাংলাদেশের ৫৩ বছর পরও চা শ্রমিকরা নুন্যতম ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত। চা শ্রমিকদের নেতৃত্বের দুর্বলতার কারণে নিষ্ঠুর মালিক পক্ষ শুধুমাত্র ৮.৫০টাকা নামমাত্র মজুরি বৃদ্ধি মাধ্যমে চা শ্রমিকদের সাথে তামাশা করছে।
তারা জানান, চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, ভূমির অধিকার সহ ৭ দফা দাবি আদায়ে আপোষহীন সংগ্রামের লক্ষ্যে বিপ্লবী ধারার ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে তুলতে সকল শ্রেণি পেশার জনগণের সহযোগিতার আহ্বান রাখেন।