21 November 2024

মঙ্গলবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

স্বৈরাচারী আচরণের সামান্যতম পরিবর্তনও হয়নি: এটিএম মাসুম

Share

ফটোনিউজবিডি ডেস্ক:

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম বলেছেন, ভেবে ছিলাম গত ডামি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ কিছুটা নমনীয় হবে। কিন্তু না, স্বৈরাচারী আচরণের সামান্যতম পরিবর্তনও হয়নি। সম্প্রতি কোটা আন্দোলনে সরকারের নগ্ন চেহারা আর সন্ত্রাসী বর্বরতা বিশ্ববাসী দেখেছে। তবে দেশের জনগণ তথা সাধারণ ছাত্র সমাজ আজ জেগে উঠেছে নিজেদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে।

বুধবার(১৭ জুলাই) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের উদ্যোগে পবিত্র আশুরা উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আশুরা মুসলমানদের জীবনে এক ঐতিহাসিক দিন। আজকে আশুরাকে শুধুমাত্র কারবালার ঘটনার সঙ্গে মিলিয়ে ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এই দিন অনেক ঐতিহাসিক ঘটনা সংগঠিত হয়েছে। হযরত আদম (আ:) এর আগমন থেকে শুরু করে, হযরত ইবরাহিম (আ:) এর আগুন থেকে মুক্তি, মুসা (আ:) এর ফেরাউনের কবল থেকে মুক্তসহ অনেক ঘটনা। একদিকে ছিল তাগুতি শক্তি, যারা নবীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে, অন্যদিকে ছিল নবী ও তার অনুসারীরা। এই লড়াইয়ের পরিণতিতে আল্লাহ তায়ালা ফেরাউনকে পানিতে ডুবিয়ে মারেন অন্যদিকে মুসা (আ:) কে বিজয়ী করেন।

মাওলানা মাসুম বলেন, বিগত ১৬ বছরে জালিম স্বৈরাচারী কর্তৃত্ববাদী সরকারের শাসনে সাধারণ মানুষ তার ন্যায্য সকল অধিকার হারিয়েছে। আজকে বাংলাদেশে হিন্দুত্ববাদী শিক্ষা কারিকুলাম মুসলমান ছাত্র-ছাত্রীদের উপরে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। প্রতিবাদ, সভা-সমাবেশে কথা বলার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমরা ভেবে ছিলাম, গত ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচনে অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসে আওয়ামী লীগ এখন কিছুটা নমনীয় আচরণ হয়ত করবে। কিন্তু না আওয়ামী লীগের স্বৈরাচারী আচরণের সামান্যতম পরিবর্তনও হয়নি।

এটিএম মাসুম বলেন, এই আওয়ামী লীগ কিছুদিন আগে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করেছিল। রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগ ব্যতীত সেই তালিকায় দেশের অন্য কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শ দল বা বাইরের কোনো সংগঠনের মুক্তিযোদ্ধাদের নাম তালিকায় রাখা হয়নি। এ থেকে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, আওয়ামী লীগের ইচ্ছায় লেখাপড়া করা ছাড়াই দেশের রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বের চেয়ারে আওয়ামীদের বসিয়ে দেওয়া হবে। মেধাহীন লোকদের কবলে পড়ে এদেশ মগের মুল্লুকে পরিণত হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন ড. খলিলুর রহমান মাদানি বলেন, সকল মাসের সম্মান আল্লাহ দিয়েছেন। হিজরি মাস বিষয়ে প্রচলিত ভুল ধারণা দেওয়া হয়, অথচ এটা পৃথিবীর সূচনা লগ্ন থেকেই আল্লাহ জারি রেখেছেন। আজ দেশে দেশে স্বৈরতান্ত্রিক সমাজের উদাহরণ চলছে। ইমাম হোসাইন ইয়াজিদের শাসনের বাইয়াত গ্রহণ না করে শাহাদাতের পথ বেছে নিয়েছেন। শহীদ হয়ে ইমাম হোসাইন জানিয়ে দিলেন স্বৈরাচার বাতিলের কাছে হক কখনো মাথা নত করে না। এমনকি লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে মূলত কাবা শরীফকেও মহান আল্লাহ পবিত্র করেছেন। এই শিক্ষা দ্বীনে হক কায়েমের জন্য উদ্বুদ্ধ হওয়া আশুরার মূল প্রতিপাদ্য বিষয়।

সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আশুরার প্রকৃত শিক্ষা স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে উত্তীর্ণ হওয়া। আল্লাহর ফায়সালা যেদিন হবে সেদিন কোনো ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না। আজ বাংলাদেশে আওয়ামী গোষ্ঠী ভেবেছে আগামী ১০০ বছর তার বংশধরেরা কোটা দিয়েই পার পেয়ে শোষণ নিপীড়ন অব্যাহত রাখবে। কোটা আন্দোলনের ন্যায্য দাবিকে অগ্রাহ্য করে এজন্যই তারা মেধাবিহীন জাতি গড়ে তুলতে চায়। গুলি করে প্রকাশ্যে মানুষ হত্যা করছে। রাজনৈতিক দলের অফিসে তল্লাশি চালাচ্ছে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বাড়িতে অন্যায়ভাবে অভিযান পরিচালনা করছে। এসব কার স্বার্থে কোন কারণে জনগণ জানতে চায়। আওয়ামী লীগ যখন কোনো বিষয়ে চাপে পড়ে তখন তা আদালতের দিকে ঠেলে দেয়।

কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির আবদুস সবুর ফকির ও অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহা. কামাল হোসাইন ও ড. আবদুল মান্নান।