ফটোনিউজবিডি ডেস্ক:
ইসরায়েলের সীমান্ত-লাগোয়া কিরিয়াত শোমোনা শহরে ইরান-সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর রকেট হামলায় অন্তত এক ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। হিজবুল্লাহর ছোড়া রকেটের আঘাতে উত্তর ইসরায়েলের কিরিয়াতে ধসে যাওয়া ভবনের নিচে চাপা পড়ে নিহত হয়েছেন তিনি। বুধবার ইসরায়েলের মেডিক্যাল সংস্থা মেগ্যান ডেভিভ অ্যাডম এই তথ্য জানিয়েছে বলে খবর দিয়েছে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি।
মেগ্যান ডেভিভ অ্যাডম বলেছে, জরুরি উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা কিরিয়াত শোমোনায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি কারখানায় তল্লাশি চালিয়েছে। ওই সময় সেখানে ২৫ বছর বয়সী এক তরুণকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পাওয়া যায়। তার শ্বাস-প্রশ্বাস ছিল না। পরে ঘটনাস্থলেই তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।
হিজবুল্লাহ বলেছে, দক্ষিণ লেবাননের একটি গ্রামে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলার জবাবে বুধবার ভোরের দিকে ইসরায়েলের কিরিয়াত শোমোনা শহরে মুহুর্মুহু রকেট হামলা করা হয়েছে।
লেবাননের দুটি নিরাপত্তা সূত্র ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছে, একদিন আগের ইসরায়েলি বিমান হামলায় লেবাননের হাব্বারিয়াহ গ্রামে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন।ইরান সমর্থিত এই গোষ্ঠীটির জরুরি ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ কেন্দ্র লক্ষ্য করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ওই বিমান হামলা চালিয়েছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
এর আগে, মঙ্গলবার উত্তর লেবাননের দুটি শহরের কাছে একাধিক বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। হামলায় হিজবুল্লাহর অন্তত তিন যোদ্ধা নিহত হয়েছেন বলে টেলিগ্রামে দেওয়া পোস্টে জানিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। লেবাননে হামলা চালানোর তথ্য নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ঢুকে শত শত মানুষকে হত্যা করে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠী হামাস। একই সঙ্গে আরও দুই শতাধিক ইসরায়েলি ও বিদেশিকে ধরে নিয়ে গাজায় জিম্মি করে রাখে তারা। ওই দিনই ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজায় পুরোমাত্রার যুদ্ধ শুরু করে।
গত পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলা নির্বিচার হামলায় ৩২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত ও আরও হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আরও লাখ লাখ মানুষ।
হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর কয়েক দিন পর ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ইসরায়েলে হামলা শুরু করে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। পাল্টাপাল্টি হামলায় ইতোমধ্যে ইসরায়েলি বাহিনী ও হিজবুল্লাহর অনেক সদস্যের প্রাণহানি ঘটেছে। লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তের উভয় প্রান্তের লাখ লাখ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন।
হামাসের মিত্র হিজবুল্লাহর সাথে ইসরায়েলের চলমান উত্তেজনা ছাড়াও ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত আরেক বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথিরাও লোহিত সাগর ও এর আশপাশে চলাচলকারী জাহাজে প্রায় প্রত্যেক দিনই হামলা চালাচ্ছে। তেহরানের সাথে ঘনিষ্ঠ ইরাকের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোও সে দেশে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে হামলা করছে।
সূত্র: রয়টার্স, এএফপি।