ফটোনিউজবিডি ডেস্ক:
সাড়ে তিন মাস ধরে চলা যুদ্ধে গাজায় হামাসের হাতে বন্দী ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হওয়ায় ইসরায়েলের পার্লামেন্টে হামলা চালিয়েছেন তাদের স্বজনরা। সোমবার জেরুজালেমে নেসেটে সংসদীয় একটি কমিটির অধিবেশন চলাকালে জিম্মিদের একদল স্বজন সেখানে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করেছেন।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেরুজালেমে সংসদীয় কমিটির অধিবেশনে হামাসের হাতে জিম্মি হওয়া ইসরায়েলিদের একদল স্বজন হামলা চালিয়েছেন। এ সময় তারা আইনপ্রণেতাদের প্রতি প্রিয়জনদের মুক্ত করার প্রচেষ্টা জোরদার করার দাবি জানান।
গাজা যুদ্ধের চতুর্থ মাসে প্রায় ২০ জন বিক্ষোভকারীর এই পদক্ষেপ ইসরায়েলে ক্রমবর্ধমান যুদ্ধবিরোধী মতামতের ইঙ্গিত দেয়। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালিয়ে এক হাজার ২০০ জনকে হত্যা ও ২৫৩ জনকে ধরে নিয়ে গাজায় জিম্মি করে রাখে হামাস।
সোমবার সংসদে বিক্ষোভ প্রতিবাদের সময় এক নারীর হাতে গাজায় জিম্মি তার তিন স্বজনের ছবি দেখা যায়। জিম্মি স্বজনদের দ্রুত উদ্ধারের দাবিতে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন তিনি। নভেম্বরে দফায় দফায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়িয়ে কিছু জিম্মিকে মুক্ত করে ইসরায়েল। তবে হামাসের হাতে এখনও গাজায় প্রায় ১৩০ জন জিম্মি বন্দী রয়েছেন।
নেসেটে ফাইন্যান্স কমিটির আলোচনার সময় সেখানে ঢুকে স্বজনদের মুক্তির ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান ওই নারী। এ সময় কান্না করতে দেখা যায় তাকে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘‘আমি কেবল তাদের একজনকে জীবিত ফিরে পেতে চাই, তিনজনের মধ্যে একজনকে।’’
কালো টি-শার্ট পরা অন্য বিক্ষোভকারীদের হাতেও বিভিন্ন দাবি সংবলিত পোস্টার দেখা যায়। একজনের হাতে ‘‘তারা সেখানে মারা গেলে আপনি এখানে বসতে পারবেন না’’ লেখা পোস্টার দেখা যায়। ‘‘তাদের এখনই, এখনই, এখনই মুক্ত করুন’’ স্লোগান দেন তারা। এ সময় কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ।
তবে হামাসের সাথে ইসরায়েলের নতুন জিম্মি মুক্তি চুক্তিতে মিসর, কাতার এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টার আলোর মুখ দেখার জোরাল সম্ভাবনা নেই। কারণ ইসরায়েল উপত্যকা থেকে হামাসকে নির্মুল না করা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
আর হামাস ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি জ্যেষ্ঠ সব ফিলিস্তিনি নাগরিককে মুক্তি ও গাজা থেকে ইসরায়েলি সৈন্য প্রত্যাহার চাওয়ায় চুক্তির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। হামাসের হাতে বন্দি জিম্মিদের মধ্যে ইতিমধ্যে অন্তত ২৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এ ছাড়া বাকি জিম্মিদের ভাগ্যে কী ঘটছে তা নিয়ে ইসরায়েল চিন্তিত।