ফটোনিউজবিডি ডেস্ক:
চট্টগ্রাম-৩ আসনে অর্থাৎ সন্দ্বীপ উপজেলায় নৌবাহিনী এবং বাকি ১৫ আসনে নির্বাচনের আগে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল বাসার মো. ফখরুজ্জামান।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে জেলার বিভিন্ন আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নিয়ে আচরণ বিধিমালা প্রতিপালন সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
ডিসি ফখরুজ্জামান বলেন, আজ আমরা জেলার ৯টি আসনের প্রার্থীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করেছি। সেখানে আমরা তাদের নির্বাচনী বিধিমালা পালন করতে নির্দেশ দিয়েছি। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে আমরাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কী কী ব্যবস্থা নিয়েছি, সেসব প্রার্থীদের জানিয়েছি। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের অভিযোগ, মতামত ও পরামর্শ আমরা শুনেছি। প্রার্থীদের নানা প্রশ্ন ছিল, তারা সেটা উপস্থাপন করেছেন।
তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা আচরণবিধি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মেনে চলছেন না। ওনারা যেসব সমাবেশ ও জনসভা করছেন, এর পারমিশন নেওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী সমাবেশ করার ২৪ ঘণ্টা আগে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানানোর কথা রয়েছে। এরপর রিটার্নিং কর্মকর্তাকে তার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ পুলিশ সুপার ও থানার ওসিকে জানাতে হয়। পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতে হয়। প্রার্থীরা যেহেতু জানাননি, অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন জায়গায় বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। প্রার্থীদের আমরা অনুরোধ করেছি, যাতে তারা আমাদের সমাবেশ করার আগে জানান। আমরা যাতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পারি।
আবুল বাসার মো. ফখরুজ্জামান বলেন, একটি জায়গায় বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। সেসব বিষয়ে প্রার্থীরা আমাদের অভিযোগ করেছেন। প্রত্যেকটি অভিযোগের সুনির্দিষ্টভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে আমরা তাদের জানিয়েছি। থানা মামলা নিয়েছে। অভিযুক্তদের আটক করা হয়েছে। আমরা নির্বাচন সুষ্ঠু করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আর আজ প্রার্থীদের আশ্বস্ত করার জন্য মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, আগামী ৭ জানুয়ারি একটি সুন্দর নির্বাচন আমরা চট্টগ্রামে উপহার দিতে পারব।
জেলা প্রশাসক বলেন, নির্বাচনের আগে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে। সন্দীপের ক্ষেত্রে নৌবাহিনী মোতায়েন হচ্ছে। আমরা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য ও বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার বন্ধ করতে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করব। যে আশঙ্কার কথা বলা হচ্ছে সেগুলোকে কেন্দ্র করে আমাদের অভিযান পরিচালনা হবে। আপনারা জানেন যে, গত পরশু দিন সরকারের জননিরাপত্তা বিভাগ একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, যেখানে নিবার্চনের পরে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত সব ধরনের অস্ত্র প্রদর্শন এবং বহন করা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার বন্ধের জন্য আমাদের কার্যক্রম অচিরেই দেখতে পাবেন।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ বলেন, আমরা গত নির্বাচনের বেশ কিছু জায়গা অ্যানালাইসিস করেছি, কোথায় কোথায় ঝামেলা ছিল। সেগুলো আমরা খুঁজে নিয়েছি। ওগুলোকে কেন্দ্র করে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করব। সেসব জায়গায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে অভিযান পরিচালনা করেছি। ১৫টির মতো অস্ত্র আমরা উদ্ধার করেছি। অবৈধ অস্ত্র যারা ব্যবহার করে তাদের প্রত্যেকের বাড়িতে আমরা তল্লাশি চালিয়েছি।
তিনি বলেন, বিগত নির্বাচনে আপনারা যেসব আসন ঝুঁকিপূর্ণ বলেছেন, সেসব আসনে আমরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। আমরা কোনো আসনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে দেখছি না এবার।