ফটোনিউজবিডি ডেস্ক:
বৈধ পথে ও ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সে গতি বাড়েনি। আগের ধারাবাহিকতায় চলতি মাসেও নিম্নগতি দেখা যাচ্ছে। ব্যাংকের মাধ্যমে এলে ডলারের দাম তুলনামূলক কম পাওয়া যাচ্ছে বলে এই চ্যানেলে রেমিট্যান্স কম পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। বিপরীতে হুন্ডিসহ অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলে বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন তারা।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ সূচক রেমিট্যান্স। এই সূচকের বাড়া বা কমার ওপর নির্ভর করছে রিজার্ভের উত্থান-পতন। রোববার (১৫ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, অক্টোবরের প্রথম ১৩ দিনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বৈধ পথে ও ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ৭৮ কোটি ১২ লাখ ৩০ হাজার ডলার। দৈনিক আসছে ৬ কোটি মার্কিন ডলার।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন ব্যাংকগুলোতে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ে ডলারের মূল্য ১১০ টাকা। আমদানিকারকদের কাছে বিক্রির ক্ষেত্রে ডলারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। আন্তঃব্যাংক ব্যবস্থায় ডলারের মূল্যও ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। কিন্তু খোলা বাজারে ডলারের দর ১১৮ টাকা। যার কারণে হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠাতে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন প্রবাসীরা। ফলে আনুষ্ঠানিক বা ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স কমে যাচ্ছে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি মাসের ১৩ দিনে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে এসেছে এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৭ কোটি ৬০ লাখ ৩০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ২ কোটি ৭৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬৭ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩০ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার এবং আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। এক মাসের ব্যবধানে রেমিট্যান্স কমেছে ৩৭ কোটি ৩৭ লাখ মার্কিন ডলার। আর সবশেষ সেপ্টেম্বরে আসে ১৩৪ কোটি ডলার, যা গত ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে ১০৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল।
বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৬১ কোটি ৭ লাখ মার্কিন ডলার। আগের ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ হয়েছিল। যার পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার।
রিজার্ভ ২৬.৮৫ বিলিয়ন ডলার
চলতি মাসের শুরুতে অর্থাৎ গত ১১ অক্টোবর দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল দুই হাজার ৬৮৫ কোটি ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী, রিজার্ভ বর্তমানে ২ হাজার ১০৭ কোটি (২১ দশমিক ০৭ বিলিয়ন) ডলার।
এর বাইরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, যা শুধু আইএমএফকে দেওয়া হয় কিন্তু প্রকাশ করা হয় না। আইএমএফ সূত্রে জানা গেছে, সেই হিসাবে দেশের প্রকৃত রিজার্ভ এখন প্রায় ১ হাজার ৭০০ কোটি বা ১৭ বিলিয়ন ডলার। গত দুই বছরে প্রতি মাসেই রিজার্ভ গড়ে ১০০ কোটি বা ১ বিলিয়ন ডলার করে কমেছে।