আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা ও বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী জেফ বেজোস এবার মহাকাশের দিকে নজর দিয়েছেন। গত শুক্রবার প্রজেক্ট কুইপারের আওতায় আমাজন দুটি প্রোটোটাইপ (একই ধরনের) স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করে। এর মাধ্যমে পুরো বিশ্বে ব্রডব্যান্ড স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে কোম্পানিটি। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ইন্টারনেট সংযোগ সরবরাহের জন্য বেজোস আগামী কয়েক বছরে ৩২০০টির বেশি কৃত্রিম উপগ্রহ স্থাপনের পরিকল্পনা করছেন। এর মাধ্যমে ইলন মাস্কের স্টারলিংকের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করবে আমাজন। ইতিমধ্যেই অনেক দেশেই স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালু করেছে স্টারলিংক।
বেজোসের উৎক্ষেপণ করা দুটি ছোট স্যাটেলাইট (উপগ্রহ) হচ্ছে কুইপারস্যাট-১ ও কুইপারস্যাট-২। অ্যাটলাস-৫ রকেটের মাধ্যমে স্যাটেলাইট দুটিকে ৫০০ কিলোমিটার উচ্চতায় (৩১০ মাইল) কক্ষপথে নিয়ে যাওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় মহাকাশযান উৎক্ষেপণকেন্দ্র কেপ ক্যানারেভাল থেকে রকেটটি উৎক্ষেপণ করা হয়।
মাটিতে ফাইবার অপটিক্যাল সংযোগের বিপরীতে আকাশে স্যাটেলাইট সংযোগের ফলে উচ্চ-ব্যান্ডউইথ ও কম লেটেন্সির (ন্যূনতম বিলম্ব) ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করাই প্রজেক্ট কুইপারের লক্ষ্য।
গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য আমাজন ২০১৮ সালে প্রজেক্টে কুইপারে ১ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করে। উচ্চ-ব্যান্ডউইথের ক্রমবর্ধমান বাজারে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা থেকেই এই প্রজেক্ট শুরু করা হয়। এই ইন্টারনেট সেবা ফাইবার কানেকশনের তুলনায় দ্রুতগতির।
স্পেসএক্স কোম্পানি ইতিমধ্যে ৪ হাজার ৮০০ স্যাটেলাইট কক্ষপথে পাঠিয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইউটেলস্যাট-ওয়ানওয়েব ও ৬২০ স্যাটেলাইট তৈরি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য কোম্পানি ছাড়াও কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং চীনও একই ধরনের স্যাটেলাইট প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে।
বেজোসে দ্রুত এই স্ট্যাটেলাইট স্থাপন করতে চাইছেন। উপযুক্ত রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহারের জন্য আমাজনের যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশনের (এফসিসি) লাইসেন্সও আছে। তবে এই লাইসেন্সের চুক্তি অনুসারে, জুলাই ২০২৬ সালের মধ্যে কুইপারের অর্ধেক স্যাটেলাইট কক্ষপথে উৎক্ষেপণ করতে হবে আর বাকি অর্ধেক ২০২৯ সালের জুলাইয়ের মধ্যে মহাকাশে পাঠাতে হবে।
এই লক্ষ্য পূরণে উৎক্ষেপণ-সহযোগীর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে আমাজনের। প্রায় ১০০টি উৎক্ষেপণ কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি রয়েছে কোম্পানির।