22 November 2024

মঙ্গলবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

ক্ষতিপূরণ ৩ লাখ টাকা সুন্দরবনে বাঘ-কুমিরের আক্রমণে মারা গেলে : পরিবেশেমন্ত্রী

Share

ক্ষতিপূরণ ৩ লাখ টাকা সুন্দরবনে বাঘ-কুমিরের আক্রমণে মারা গেলে : পরিবেশেমন্ত্রী

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, সুন্দরবনে বাঘ ও কুমিরের আক্রমণে কেউ মারা গেলে তার পরিবারকে তিন লাখ টাকা এবং গুরুতর আহত হলে এক লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ বাবদ দেওয়া হচ্ছে। আজ বুধবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ কথা বলেন। এ সময় মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরিবেশমন্ত্রী বলেন, যথাযথ সংরক্ষণের কারণে সুন্দরবনে বানরের সংখ্যা তিন গুণ বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে বাঘও। ডলফিন সংরক্ষণের জন্য সুন্দরবন ও সংলগ্ন এলাকায় মোট ছয়টি ডলফিন অভয়ারণ্য এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। বন্য প্রাণী শিকার, হত্যা, পাচার ও এ-সংক্রান্ত অপরাধ উদ্‌ঘাটনে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রদানকারীকে আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হয়ে থাকে। গত পাঁচ বছরে কোনো বাঘ হত্যার ঘটনা ঘটেনি উল্লেখ করে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, চিত্রল হরিণের সংখ্যা ৮৩ হাজার বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার ৩৫৭টি। বন্য শূকর ২৮ হাজার থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৫ হাজার ১১০। বানর তিন গুণ বেড়ে ৫১ হাজার থেকে ১ লাখ ৫২ হাজার ৪৪৪টি হয়েছে।

বাঘ সুন্দরবন থেকে বিলুপ্ত হচ্ছে না। ২০১৫ সালে ক্যামেরা ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে সুন্দরবনের বাঘ জরিপ করা হয়েছে, সেখানে ১০৬টি বাঘ পাওয়া গেছে। পরে ২০১৮ সালে ১১৪টি বাঘ পাওয়া যায়। বাঘের বৃদ্ধির হার প্রায় ৮ শতাংশ।

গত অর্থবছর থেকে সুন্দরবনে বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প সম্পন্ন জিওবি অর্থায়নে ৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। তার মাধ্যমে ক্যামেরা ট্র্যাপিং শুরু করেছি। ট্র্যাপিং শেষ হলে তথ্য অ্যানালাইসিস করে আগামী বছর পূর্ণাঙ্গ বাঘের সংখ্যা জানাতে পারবো।

শাহাব উদ্দিন বলেন, সরকার সুন্দরবনে স্মার্ট পেট্রোলিং ব্যবস্থা চালু করেছে এবং এর মাধ্যমে সুন্দরবনের বিভিন্ন অপরাধ দমনে উল্লেখযোগ্য সফলতা পাওয়া গেছে। ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত স্মার্ট পেট্রোলিংয়ের মাধ্যমে ২ হাজার ৪৯৮ জন অপরাধীকে আটক এবং ১ হাজার ১৬৯টি ট্রলার বা জলযান জব্দ করা হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৮ মাসে বিষ তথা রাসায়নিক প্রয়োগে মাছ ধরার অভিযোগে ৮২ জন আসামিকে আটকসহ ১৭৩ জন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে ৭৩টি বন মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ছাড়া হরিণ শিকারের অভিযোগে ৭৭ জনকে আটকসহ ১৯৯ জন আসামির বিরুদ্ধে ৫৪টি বন মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বনমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে সুন্দরবন এবং এর জীববৈচিত্র্যের সংরক্ষণ ও উন্নয়নে সরকার মোট ২৯৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ৬টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে সুন্দরবনের প্রতিবেশ, বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা, বিজ্ঞানভিত্তিক বন ব্যবস্থাপনা ও উপকূলীয় এলাকায় সবুজ বেষ্টনী তৈরির কাজ চলমান রয়েছে বলেও জানান।