পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান দেশটিতে ক্ষমতাসীন জোট সরকারের সঙ্গে আলোচনার আগ্রহ জানিয়েছেন। দেশের কল্যাণের জন্য প্রয়োজনে রাজনীতি ‘ছেড়ে দেবেন’ বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভিডিওবার্তায় ইমরান খান বলেন, ‘আমি একটি কমিটি গঠন করছি। ক্ষমতায় আছেন— এমন যে কোনো ব্যক্তি বা দলের সঙ্গে ওই কমিটি বৈঠক করবে। সেই বৈঠকের এজেন্ডা থাকবে দু’টি— ১) আমি রাজনীতি ছেড়ে দিলে দেশের কল্যাণ হবে কিনা। যদি হয়— সেক্ষেত্রে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেবো এবং ২) নির্ধারিত সময় অর্থাৎ অক্টোবর মাসে নির্বাচন। পিটিআই বিশ্বাস করে— নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন হলে দেশ লাভবান হবে।’
‘কেবল এই দু’টি ব্যাপারে আমরা তাদের ব্যাখ্যা চাই। যদি তারা আমাদের কমিটিকে বোঝাতে সক্ষম হয় যে, আমি রাজনীতি ছেড়ে দিলে দেশের লাভ হবে— আমি পিছু হটব এবং রাজনীতি ছেড়ে দেবো।’
আলোচিত আল কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৯ মে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট থেকে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানের সীমান্তরক্ষী ও আধা সামরিক বাহিনী রেঞ্জার্সের একটি দল। এই গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে দেশজুড়ে নজিরবিহীন বিক্ষোভ শুরু করেন পিটিআইয়ের কর্মী-সমর্থকরা।
বিক্ষুব্ধ পিটিআই কর্মী-সমর্থকরা পাকিস্তানের ৪টি প্রদেশের বিভিন্ন সরকারি ভবন, সেনানিবাস ও সেনাদপ্তরে হামলা-ভাঙচুর চালান। দেশটির গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম সেনানিবাস ও সামরিক বাহিনীর দপ্তরে হামলার ঘটনা ঘটেছে সেই বিক্ষোভে।
এদিকে, গ্রেপ্তারের ২ দিন পর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনায় এই মামলায় জামিন লাভ করেন ইমরান। ওই দিন থেকেই সেনানিবাস ও সামরিক দপ্তরে হামলায় সংশ্লিষ্টদের খুঁজে বের করতে অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী ও পাকিস্তানের পুলিশ। সামরিক বাহিনী ঘোষণা দেয়—হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিচার করা হবে সামরিক আইনে।
এদিকে, সামরিক বাহিনী ও পুলিশ অভিযান শুরুর পরপরই পিটিআইয়ের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীদের দলত্যাগের হিড়িক শুরু হয়। গত কয়েকদিনে পিটিআই ত্যাগ করেছেন ৩০ জনেরও বেশি নেতা। এই নেতাদের মধ্যে ফাওয়াদ চৌধুরীর মতো কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন নেতাও রয়েছেন।
তারপরই বুধবার এই ভিডিওবার্তা দিলেন পিটিআই চেয়ারম্যান। দেশে চলমান পুলিশি অভিযানের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা দলের পুরো নেতৃত্বকে তো জেলবন্দি করেছেই, উপরন্তু যারা পিটিআইয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়, তাদেরও গ্রেপ্তার করছে। কেবলমাত্র তাদেরই মুক্তি দেওয়া হচ্ছে— যারা দলত্যাগে সম্মতি দিচ্ছে।’
‘পাকিস্তানের ইতিহাসে এর আগে এমন অভিযান দেখা যায়নি।’
সূত্র : জিও টিভি