23 December 2024

মঙ্গলবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প

Share

ফটোনিউজবিডি ডেস্ক:

মার্কিন পর্ন ছবির সাবেক অভিনেত্রী স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সম্পর্কের কথা গোপন রাখতে ওই অভিনেত্রীকে গোপনে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আদালতে যে মামলা চলছে, তাতে আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প।

আগামী মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের লোয়ার ম্যানহাটান এলাকার অপরাধ আদালতে মামলার শুনানি হবে। ওইদিনই আত্মসমর্পণ করবেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

ট্রাম্পের আইনজীবী জো ট্যাকোপিনা শুক্রবার টেলিভিশনে দেওয়া সক্ষাৎকারে নিশ্চিত করেছেন এ তথ্য।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় সাবেক পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে তার পক্ষ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দেওয়া হয়েছিল। স্টর্মি ড্যানিয়েলসের দাবি, ২০০৬ সালের গ্রীষ্মে ট্রাম্পের সঙ্গে তার যৌন সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।

ওই বছর নভেম্বরের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শুরু হয়। তার আগেই ট্রাম্পের আইনজীবী মাইকেল কোহেন তাকে ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপারে ‘মুখবন্ধ রাখতে’ ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দিয়েছিলেন।

২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে এ নিয়ে মুখ না খুলতে তাঁকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দেওয়া হয়েছিল। ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোহেন তাঁকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার দিয়েছিলেন।

২০১৮ সালে ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে থাকাকালেই এই অর্থ লেনদেনের এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। সে সময় ট্রাম্পের সঙ্গে করা ‘গোপন চুক্তি’ বাতিল করতে আদালতে আবেদন জানান ড্যানিয়েলস; আর তার জেরেই নির্বাচনী প্রচারণা তহবিল আইনের সম্ভাব্য লঙ্ঘণের অভিযোগে মামলা হয় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে।

মার্কিন আইনে এভাবে অর্থ দেওয়া অবৈধ নয়। কিন্তু ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ হল, ড্যানিয়েলসকে দেওয়া ওই অর্থ তিনি কোহেনকে দেওয়া লিগ্যাল ফি হিসেবে দেখিয়ে ব্যবসার খরচ হিসেবে চালিয়েছেন । আর নিউ ইয়র্কের আইনে ব্যবসার নথিতে ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য দেওয়া ফৌজদারি অপরাধ।

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তিনিই প্রথম সাবেক প্রেসিডেন্ট, যাকে ফৌজদারি মামলায় বিচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এমন এক সময় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হল, যখন তিনি ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ার জন্য রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে আছেন।

শুরু থেকেই অবশ্য ওই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন ট্রাম্প। শুক্রবারও এক বিবৃতিতে নিজেকে ‘সম্পূর্ণ নির্দোষ’ দাবি করে তিনি বলেছেন, ‘এটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক নিপীড়ন, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ। যে মাত্রায় এটা করা হচ্ছে, তার নজির ইতিহাসে নেই।

বৃহস্পতিবার ম্যানহ্টনের গ্র্যান্ড জুরি আদালত তাকে অভিযুক্ত করে। কী কী অভিযোগে সাবেক এই প্রেসিডেন্টের বিচার হবে, তা এখনও প্রকাশ করা হয়নি; তবে সিএনএন জানিয়েছে, নির্বাচনী তহবিল আইন লঙ্ঘণের পাশাপাশি ব্যবসায়িক জালিয়াতির অন্তত ৩০টি অভিযোগ আনা হচ্ছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে।

টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে জো ট্যাকোপিনা বলেন, বর্তমানে ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে নিজের রিসোর্ট মার-এ-লাগাতে আছেন ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার নিজের ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে চেপে নিউইয়র্ক আসবেন তিনি। তারপর সেখানে নিজের মালিকানাধীন ট্রাম্প টাওয়ারে রাতযাপন শেষে মঙ্গলবার আদালতে হাজির হবেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

মঙ্গলবার ট্রাম্পের আগমন ঘিরে আদালত ও তার আশপাশের সড়কে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে জো ট্যাকোপিনা বলেছেন, আপাতত জামিন নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা ট্রাম্পের নেই এবং ‍তিনি বিচার প্রক্রিয়ায় উপস্থিত থাকতেই আগ্রহী।

মার্কিন রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, নিজের ভক্ত-সমর্থকদের সহানুভূতি আদায়ের জন্যই জামিন নেওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন ট্রাম্প। এমনটি ভক্ত-সমর্থকদের কাছে মামলার খরচ মেটানোর জন্য অর্থ সহায়তাও চেয়েছেন তিনি।