নির্বাচনের খবর সংগ্রহে সাংবাদিকদের কাজে বাধা দিলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে কারাদণ্ড ও জরিমানার কথা ভাবছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ লক্ষ্যে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি।
এরই মধ্যে সাংবাদিকদের কাজে বাধা দিলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ডসহ বেশ কিছু সুপারিশ পাঠানো হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়ে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান।
মো. আহসান হাবিব খান বলেন, ‘আমরা কিছু কিছু আইন পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছি। যেহেতু আপনারা (সাংবাদিক) আমাদের চোখ, কান এবং আমাদের বদলে আপনারা হাজির থেকে সঠিকভাবে নির্বাচন কাভার করেন। আপনাদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমরা আইনে নতুন একটা বিধান সংযোজন করেছি। সেটা হচ্ছে—কেউ যদি আপনাদের বাধাগ্রস্ত করে, যদি আপনাদের অ্যাসল্ট করে, যদি আপনাদের ইকুইপমেন্ট এবং সঙ্গী-সাথী যারা আছেন, তাদের কোনো ক্ষতি করার চেষ্টা করে সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ তিন বছর এবং ন্যূনতম এক বছর জেলের বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া জরিমানার বিধান রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের ক্যামেরাই আমাদের চোখ। আমাদের চোখে যেন প্রত্যেকটা অনিয়ম ধরা পড়ে। এজন্য আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব। আমার (ইসির) অন্যায়গুলো আপনার চোখে ধরা পড়লে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে মো. আহসান হাবিব খান বলেন, ‘আমরা চ্যালেঞ্জ নিয়েছি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে অনিয়ম, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার। এজন্য এই নির্বাচনে ২৬৫টি ভোটকক্ষে ৩৬৫টি সিসি ক্যামেরা রেখেছি। কন্ট্রোল রুম আমাদের ইসিতেই আছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে যেখানে যেটা অনিয়ম ধরা পড়েছে, আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। জোরপূর্বক একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, সেটা আমরা চিহ্নিত করেছি। মাঠ প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতিা নিশ্চিত হওয়া ছাড়াও যারা সন্ত্রাসী, জোরপূর্বক ভোট দেওয়ার চেষ্টা করে থাকে, তারা ভয়ের মধ্যে থাকে। ১১টা বুথে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। আমরা অনিয়মে জড়িতদের সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় এনেছি।’
আহসান হাবিব খান আরও বলেন, ‘সংসদ নির্বাচনেও সব কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা দেওয়ার আন্তরিক ইচ্ছা, প্রচেষ্টা থাকবে। এটার সঙ্গে আর্থিক ও টেকনিক্যাল সাপোর্টের বিষয় আছে। কোথাও কোথাও বিদ্যুৎ, ইন্টারনেটও নাই। তবে আমাদের ইচ্ছা আছে।’
এ নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, ‘বাজেট বরাদ্দের ঘাটতি থাকলে ঝূঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে সিসি ক্যামেরা দেব। ইচ্ছা আছে পুরো নির্বাচনটাই সিসি ক্যামেরার মধ্যে আনা। সংসদের আগে যত নির্বাচন হবে সবগুলোতে ইভিএম ব্যবহার করবো এবং সিসি ক্যামেরা থাকবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সিসি ক্যামেরার প্রয়োজনীতা বাড়ছে। এটা লাক্সারি নয়, এটা এখন প্রয়োজন।’
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে আহসান হাবিব খান বলেন, ‘আস্থা বিশ্বাস হচ্ছে নিজস্ব ব্যাপার। আমার ওপর আমার বিশ্বাস আছে। কিন্তু, আপনার কি আছে? আস্থা ফেরানোর চেষ্টা শেষ পর্যন্ত আমরা করব। আমাদের নিজের ওপর শতভাগ আত্মবিশ্বাস আছে।’