বিদেশে টাকা পাচারকারীরা সরকার ও সরকারি দলের লোক বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে এক যোগদান অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জিএম কাদের বলেন, গেলো বছর শুধু সুইস ব্যাংকেই বাংলাদেশ থেকে জমা হয়েছে প্রায় ৪ লাখ কোটি টাকা। আমেরিকা, কানাডা, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরসহ অন্যান্য দেশে আরও অনেক টাকা পাচার হয়েছে। তথ্য চাইলেই সুইস ব্যাংক তথ্য দিচ্ছে কিন্তু বাংলাদেশ সরকার পাচারকারীদের তথ্য চাচ্ছে না। কারণ, যারা টাকা পাচার করেছে তারা সরকারে এবং সরকারি দলের লোক। তারা যেন পাচারকারী হিসেবে চিহ্নিত না হয় সেজন্যই তালিকা প্রকাশ করছে না সরকার।
দলের ভাইস চেয়ারম্যান মো. জসীম উদ্দিন ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম, মোস্তফা আল মাহমুদ, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা লিয়াকত আলী খান প্রমু্খ।
এর আগে, সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম রব্বানী নেতাকর্মীদের নিয়ে গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের হাতে ফুল দিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। গোলাম রব্বানীর সাথে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সুরুজ আলী, সামছুল ইসলাম, আব্দুল হাকিম, সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, আব্দুল হান্নান তালুকদার, মতিউর রহমান তালুকদার, ইউপি সদস্য আব্দুল হাদি, আব্দুল হাকিম।
গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, দেশ পরিচালনায় সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ। তেলের দাম বাড়িয়ে মানুষের কষ্ট বাড়িয়ে দিয়েছে। সরকার বিভিন্নভাবে মুনাফা করে, উন্নয়ন ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে লুণ্ঠন করছে। সরকার মুনাফার টাকা ব্যাংকে রাখছে। নামে-বেনামে সেই টাকা ঋণ করে বিদেশে পাচার করছে একটি শ্রেণী। প্রজাতন্ত্রের নামে দেশে এক ব্যক্তির শাসন তৈরি হয়েছে। গণতন্ত্রের নামে দেশে স্বৈরশাসন চলছে। উন্নয়নের নামে দেশে ঘুষ ও দুর্নীতির জোয়ার বইছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
জিএম কাদের বলেন, লোডশেডিং কেন? উৎসব করা হলো আমরা নাকি বিদ্যুৎ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ? আমরা যখন বলেছি দেশ শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে, তখন সরকারি দলের পক্ষ থেকে বলা হলো আমি নাকি অশিক্ষিত। তাহলে এখন লোডশেডিং কেন? সারাদিন বিশ্বব্যাংক, আইএমনএফ এবং এডিবিকে গালাগাল করে এখন কেন ঋণের জন্য তাদের পিছনে ধরনা দিতে হচ্ছে? কেন এই অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি হলো? বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেই কুইক রেন্টাল, রেন্টাল এবং ক্যাপাসিটি চার্জের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করা হচ্ছে।
দেশের মানুষকে মুক্তি দিতে দেশপ্রেমিক সর্বস্তরের মানুষকে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে দলটির চেয়ারম্যান বলেন, জাতীয় পার্টি দেশের সম্ভাবনাময় রাজনৈতিক শক্তি। তাই প্রতিদিন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সমাজের প্রতিষ্ঠিত মানুষ দলে দলে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিচ্ছে।
পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, দেশে চিকিৎসা নেই। হাসপাতালের মেঝেতে, বারান্দায়, সিঁড়িতে ও বাথরুমেও রোগীরা শুয়ে আছেন। আমরা পানির নিচ দিয়ে ট্যানেল, ফ্লাইওভার ও মেগা প্রকল্প আর চাই না। আমরা চাই, প্রতিটি উপজেলায় বিষেশায়িত হাসপাতাল। যেখানে স্বপ্লমূল্যে সাধারণ মানুষ সু-চিকিৎসা পায়। সরকার যেকোনও মূল্যে আবারও ক্ষমতায় থাকতে চায়। এজন্য তারা ইভিএম নিয়ে জালিয়াতির ষড়যন্ত্র করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন তোতা, এম এ রাজ্জাক খান, আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, সমরেশ মন্ডল, আরিফুল ইসলাম রুবেল প্রমুখ।