কোভিড পরবর্তী অর্থনৈতিক অভিঘাত এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলশ্রুতিতে বিশ্বব্যাপী জ্বালানিসহ নিত্যপণ্যের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধি চলছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের ব্যয়সাশ্রয় নীতি কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ফলে মন্ত্রণালয়গুলোকে অনাবশ্যক ব্যয় পরিহারসহ সকল ক্ষেত্রে ব্যয় হ্রাসের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২০ জুলাই) সরকারের ব্যয়সাশ্রয়ে কার্যকর কর্মপন্থা নিরূপণের লক্ষে সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিবদের সাথে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে এই নির্দেশনা আসে।
এ ছাড়া সরকারি সকল দপ্তরে বিদ্যুতের ২৫ শতাংশ ব্যবহার হ্রাস করতে হবে। জ্বালানিখাতের বাজেট বরাদ্দের ২০ শতাংশ কম ব্যবহারের লক্ষে অর্থ বিভাগ প্রয়োজনীয় পরিপত্র জারি করবে।
সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতেমা ইয়াসমিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়াসহ সংশ্লিষ্টরা আলোচনায় অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস রাজস্ব ব্যয় সংকোচন, উন্নয়ন ব্যয়ের সর্বোত্তম ব্যবহার, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বৃদ্ধি, নিত্যপণ্যের মূল্য সহনশীল পর্যায়ে রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সকল সচিবদের অনুরোধ জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বানের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি মন্ত্রণালয়গুলোকে অনাবশ্যক ব্যয় পরিহারসহ সকল ক্ষেত্রে ব্যয় হ্রাসের নির্দেশনা দেন।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে আনতে সকল মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় কর্মপন্থা নিরূপণ করবে। সরকারি সকল দপ্তরে বিদ্যুতের ২৫% ব্যবহার হ্রাস করতে হবে। জ্বালানিখাতের বাজেট বরাদ্দের ২০% কম ব্যবহারের লক্ষে অর্থ বিভাগ প্রয়োজনীয় পরিপত্র জারি করবে।
অনিবার্য না হলে শারীরিক উপস্থিতিতে সভা পরিহার করতে হবে এবং অধিকাংশ সভা অনলাইনে আয়োজন করতে হবে।
এমনকি অত্যাবশ্যক না হলে বিদেশ ভ্রমণ যথাসম্ভব পরিহার করতে হবে। খাদ্যদ্রব্যসহ নিত্যপণ্যের মূল্য সহনীয় রাখতে বাজার মনিটরিং, মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মজুতদারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ অন্যান্য পদক্ষেপ জোরদার করতে হবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী পরিবহনে ব্যক্তিগত যানবাহনের ব্যবহার যৌক্তিকিকরণের লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বৃদ্ধিকল্পে অর্থ-বছরের শুরু থেকেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এনবিআরকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রতিটি মন্ত্রণালয় নিজস্ব ক্রয় পরিকল্পনা পুনঃপর্যালোচনা করে রাজস্ব ব্যয় হ্রাসের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।